সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে ঐক্যমত হয়নি। ফলে শবরীমালা মন্দিরে যে কোনও বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আপাতত কোনও রায় দিল না সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। মামলাটি পাঠানো হল শীর্ষ আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে। সেখানে ৭ বিচারপতির তত্বাবধানে এই মামলার রায়দান হবে। আজ এই নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ। ফলে আপাতত ঝুলেই রইলো কেরলের শবরীমালায় যে কোনও বয়সের মহিলাদের অবাধে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি।
সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ফলি নারিমান ভিন্নমত পোষন করেন। তাঁরা ২০১৮ সালের শবরীমালা সংক্রান্ত রায়টি-ই বহাল রাখার বিষয়ে মত দেন। এই মামলার রায় পড়তে গিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্তের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, শুধু হিন্দু মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারই সীমাবদ্ধ, এমনটা নয়। মসজিদের ক্ষেত্রেও একই কঠোর নিয়ম আছে। পার্সি মহিলাদের মামলা এবং দাউদি বোরা মামলার বিষয়ও একই। এই সব মামলা আদালতে বিচারাধীন। এধরনের ধর্মীয় বিষয় শীর্ষ আদালতের বিচারের আওতায় আসে কি না, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি খানউইলকার ও বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা প্রথমে লিখিতভাবে এই বিষয়টি সমন্ধে প্রধান বিচারপতিকে গগৈকে অবহিত করেন। তবে, পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সংখ্য়াগরিষ্ঠ মত শবরীমালা নিয়ে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবরের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধী সতর্ক হোন, আদালত অবমাননার মামলা খারিজ করে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
শবরীমালা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত কাণ্ডারারু রাজিভারু সুপ্রিম কোর্টের এদিনের রায়ে সন্তোষপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলা পাঠানোয় আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস এতে আরও পোক্ত হল। রায়ে আয়াপ্পা ভক্তদের পৃথক সম্প্রদায় বলে গণ্য করা হয়েছে, যা খুবই সাধুবাদযোগ্য।'
প্রঙ্গত, ২০১৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর দেশের তৎকালীন বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের তরফে কেরালার শবরীমালার মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের আয়াপ্পা দর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। বিচারপতিরা বলেছিলেন, ৫০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাকে, ধর্মীয় আচার বলে মেনে নেওয়া যায় না। এর পরে ওই মন্দির নিয়ে উত্তাল হয়েছে কেরল-সহ গোটা দেশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মন্দিরের দরজা একাধিকবার খুললেও ভক্তদের বাধায় একজনও ৫০-এর কমবয়সী মহিলা ঢুকতে পারেননি সেখানে। রায় কার্যকর করতে সংশয়ী ছিলেন শবরীমালার প্রধান পুরোহিত সংগঠন। তাঁরা এ নিয়ে কেরল সরকারের সঙ্গে আলোচনাতেও রাজি হয়নি। এই রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য ৪৯ টি আর্জি জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। পরে পুনর্বিবেচনা আর্জি গ্রহণ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
Read the full story in English