Advertisment

শবরীমালা মন্দিরে সমস্ত মহিলাদের অবাধ প্রবেশাধিকার- সুপ্রিম কোর্ট

Sabarimala Supreme Court Verdict: প্রধান বিচারপতি বলেন, পিতৃতান্ত্রিক নিয়মসমূহ বদলাতে হবে এবং ধর্মের অন্তর্গত পিতৃতন্ত্রকে প্রার্থনার অধিকার এবং ধর্মাচরণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া যাবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চার দোষীকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট

শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন সব বয়সের মহিলারা। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে কেরালার এই মন্দিরে এত দিন ধরে যে প্রথা চালু ছিল, তার অবসান ঘটল।

Advertisment

শতাধিক বছর ধরে চলে আসা এই প্রথার সমাপ্তি ঘটিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে ১৯৬৫ সালের যে আইন বলে এই প্রথা চালু ছিল তা হিন্দু নারীর ধর্মাচরণের অধিকারে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী। একই সঙ্গে বেঞ্চ বলেছে ধর্মের পিতৃতন্ত্রকে প্রার্থনার অধিকারে বাধা সৃষ্টি করতে দেওয়া যায় না।

আরও পড়ুন, এলগার পরিষদ কাণ্ডে পাঁচ সমাজকর্মীর মুক্তির আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, আরও ৪ সপ্তাহ গৃহবন্দিত্বের নির্দেশ

এই সাংবিধানিক বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা। এর মধ্যে ভিন্ন মত পোষণ করেন বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা। তাঁর রায় অনুসারে, এ ব্যাপারে যে আবেদন করা হয়েছে তা গুরুত্ব পাওয়ারই যোগ্য নয়।

এতদিন ধরে শবরীমালা মন্দিরে প্রথানুযায়ী ১০ থেকে ৫০ বছর পর্য়ন্ত মহিলাদের প্রবেশাধিকার ছিল না। এর বিরুদ্ধে কেরালা হাইকোর্টে যে আবেদন করা হয়েছিল, তাতে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল যে, কেবলমাত্র তন্ত্রী(পুরোহিত)-ই এই প্রথার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। এর বিরুদ্ধে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের বক্তব্য় ছিল এই প্রথা প্রকৃতিগত ভাবেই বৈষম্যমূলক এবং মহিলাদের প্রার্থনার স্থান বাছাইয়ের অধিকারে হস্তক্ষেপকারী।

এদিন রায়দানের সময়ে বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং তাঁর নিজের সহমতের ভিত্তিতে প্রথম রায় পড়ে শোনান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। তিনি বলেন, পিতৃতান্ত্রিক নিয়মসমূহ বদলাতে হবে এবং ধর্মের অন্তর্গত পিতৃতন্ত্রকে প্রার্থনার অধিকার এবং ধর্মাচরণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, জীববৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্য সংবিধানকে অতিক্রম করতে পারে না।

বিচারপতি দীপক মিশ্র তাঁর রায়ে বলেছেন, আয়াপ্পার অনুসারীরা কোনও ভিন্ন সম্প্রদায়ভুক্ত নন। ১৯৬৫ সালের কেরালার এ সম্পর্কিত আইন হিন্দু মহিলাদের ধর্মাচরণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে। তিনি আরও বলেন, শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের  প্রবেশাধিকারে বয়সভিত্তিক নিষেধাজ্ঞাকে অপরিহার্য বলে গণ্য করা যাবে না।

বিচারপতি রোহিংটন নরিম্যান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তিনি বলেন মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞা সংবিধানের ২৫ (১) অনুচ্ছেদ খর্বকারী। এদিন ১৯৬৫ সালের কেরালা হিন্দু প্লেসেস অফ পাবলিক ওয়ারশিপ (অথরাইজেশন অফ এন্ট্রি) আইনের ৩ (বি) উপধারা নাকচ করে দেন নরিম্যান। সংবিধানের তৃতীয় অংশের অধীন মৌলিক অধিকার সমাজ রূপান্তরের ক্ষেত্রে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিচারপতি চন্দ্রচূড় তাঁর রায়ে বলেন, ‘‘ধর্ম মহিলাদের ঈশ্বর উপাসনাকে অস্বীকার করার বর্ম হতে পারে না।’’ এ ব্যাপারে মহিলাদের খাটো হিসেবে দেখা সাংবিধানিক নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

অন্য চার বিচারপতির সঙ্গে একমত হননি বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘শবরীমালা মন্দির ও তাঁর দেবতা সংবিধানের ২৫ নং অনুচ্ছেদ দ্বারা রক্ষিত এবং ধর্মাচরণ কেবলমাত্র সংবিধানের ১৪ নং অনুচ্ছেদের মাধ্যমেই পরীক্ষিত হতে পারে না।’’ তিনি বলেন, গভীর ধর্মবোধ আদালত দ্বারা অনূদিত হওয়া সম্ভব নয়।

শীর্ষ আদালতে ৪-১ মতামতের ভিত্তিতে শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আর কোনও বাধা রইল না। তবে এ ব্যাপারে ট্রাভাঙ্কোর দেবোস্বম বোর্ড রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে বলে জানা গেছে। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এ পদ্মকুমারকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এ এন আই এ খবর জানিয়েছে। এই বোর্ডই আয়াপ্পা মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।

supreme court
Advertisment