সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শবরীমালা মন্দিরের গর্ভগৃহে মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে প্রতিবাদে মুখর কেরালা। সম্প্রতি সমাজকর্মী রেহানা ফতিমা কোচি থেকে পাঁচ ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে পম্পায় গেছিলেন। লক্ষ্য, মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করা। শেষমেশ যাত্রা সফল হয়নি। মন্দির চত্বরে প্রবেশ করলেও গর্ভগৃহে পৌঁছতে পারেননি রেহানা।
মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আগেই জানিয়েছিলেন আয়াপ্পা ভক্তদের সঙ্গে আছেন তিনি। মন্দিরের দায়িত্বে থাকা দেবস্বরম বোর্ডের মন্ত্রী কাডাকামপল্লী সুরেন্দ্রণ বলেন, সত্যিকারের ভক্ত হিসেবে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে সাহায্য করতে প্রস্তুত তাঁরা। কিন্তু সমাজকর্মীরা ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য মন্দিরে প্রবেশ করতে চাইলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
পুলিশের গাড়িতে কোচিতে ফেরার পথে রেহানা জানান, "তিনজন মহিলাকে মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় আমি আর ঘরে বসে থাকতে পারিনি।" পুলিশি নিরাপত্তা থাকা সত্তেও শবরীমালার গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি রেহানা এবং তাঁর সাংবাদিক বন্ধুকে।
আরও পড়ুন: মহিলাদের প্রবেশাধিকার দিলে মন্দির বন্ধ করে দেব: শবরীমালার প্রধান পুরোহিত
শুক্রবার সকাল থেকেই রেহানার শবরীমালা যাত্রা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল। ৩০ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ফতিমা একটি ছবি পোস্ট করেন কালো পোশাকে (শবরীমালায় ভক্তরা সাধারণত কালো পোশাকেই যান)। ছবিতে রেহানার 'ভঙ্গি' নিয়ে আপত্তি তোলেন অনেকেই। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ফতিমা বলেছেন, "সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খুশি হয়ে ওই ছবি পোস্ট করেছিলাম। বিন্দুমাত্র অশালীনতা ছিল না তাতে। আয়াপ্পাদের প্রতি বিদ্রূপও ছিল না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকদের রেহানা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ চলচ্চিত্র পরিচালক মনোজ শ্রীধরণের সঙ্গে তিনি পম্পা থানায় পুলিশি নিরাপত্তা চাইতে যান। "আমার নাম শুনে সন্দেহের দৃষ্টিতে আমায় দেখেছিল ওরা। আমি আমার অন্য নামটা জানিয়েছিলাম, সূর্য গায়ত্রী"।
রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারে জন্মে ফতিমা অদ্বৈতবাদ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ফতিমা জানান, "আমার ধর্মের কড়া ফতোয়া, হাজার বিধি নিষেধ আমায় ক্লান্ত করত, তাই হিন্দু ধর্মের প্রতি আমার ঝোঁক বাড়ে"।
"মন্দিরে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য আসিনি। মন্দির পর্যন্ত পৌঁছতে পারব, নিশ্চিত ছিলাম, কিন্তু মন্দির থেকে কতটা নিরাপদে ফিরতে পারব, সুনিশ্চিত ছিলাম না, তাই পুলিশি নিরাপত্তা নিতে হয়েছিল", জানিয়েছেন রেহানা।