মাওবাদী যোগসাজশের অভিযোগে ধৃত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক জিএন সাইবাবার জামিনের সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার সুপ্রিম কোর্টে ধৃতদের জেলবন্দি রাখার বিষয়ে একটি আবেদন করে আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে। আজ দীর্ঘ ২ ঘন্টার শুনানি শেষে বম্বে হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৮ ই ডিসেম্বর। ততদিন পর্যন্ত সাইবাবা ও তার সঙ্গীদের জেল হেফাজতে থাকারই নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
আজকের এই শুনানির শেষে সাইবাবা সহ ছয় অভিযুক্তের জেল হেফাজতই বলবৎ রাখে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ততদিন পর্যন্ত সাঁইবাবা ও অন্য আসামিদের জেলেই থাকতে হবে জানায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট এদিন সাইবাবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে ঘরবন্দী থাকার আবেদনও খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চ সাইবাবা সহ অন্য অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়ার বোম্বে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সরকারের আপিলের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে।
শুক্রবার যখন বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ সাইবাবা সহ পাঁচ অভিযুক্তের মুক্তির নির্দেশ দেয়, মহারাষ্ট্র সরকার অবিলম্বে প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। মহারাষ্ট্র সরকারের আবেদন গ্রহণ করে শনিবার বেলা ১১টায় জরুরি ভিত্তিতে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত। এদিনের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বম্বে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে জানায়, সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁদের মুক্তির সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: < Explained: পাকিস্তান-চিন পরমাণু বোমা ফেললে ঠেকাবে ভারত, গোপনে পরীক্ষা নয়াদিল্লির >
আগের দিন, বোম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ মাওবাদী লিঙ্ক এবং ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মামলায় সাইবাবা সহ তার পাঁচ সঙ্গীকে মুক্তি দেয়। বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি রোহিত দেও এবং অনিত পানসরের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের সাজার নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে জানিয়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে মাওবাদী সংস্রবের কোনও আদালত গ্রাহ্য তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি মহারাষ্ট্র পুলিশ। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়া চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল নাগপুর বেঞ্চ।
এদিন সাইবাবার আইনজীবী জানান, সাইবাবা, পোলিও-সম্পর্কিত অসুস্থতায় ভুগছেন এবং জেলের মধ্যেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেছেন। এছাড়াও তাঁর তিনি একাধিক শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। তার ভিত্তিতে সাইবাবার সাজা স্থগিত করার জন্য একটি আবেদনও করা হয়, কিন্তু সেটিও খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
২০১৪ সালে দিল্লির অধ্যাপক সাইবাবাকে গ্রেফতার করেছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। এর পর নিম্ন আদালত সাইবাবা সহ তার সঙ্গীদের যাবব্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। নিম্ন আদালতের ওই রায়কেই ২০১৭ সালে হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন প্রতিবন্ধী সাইবাবা। শারীরিক অক্ষমতার কারণে জামিন পেয়ে গেলেও ২০১৭-য় নিম্ন আদালত ইউএপিএ আইনে সাজা ঘোষণার পরে জেলে যেতে হয়েছিল প্রতিবন্ধী ওই অধ্যাপককে। সেই থেকেই নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি তিনি।