আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকারের এক মন্ত্রীকে। ধৃত মন্ত্রীর নাম সত্যেন্দ্র জৈন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডি সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই তদন্তের জাল গোটাচ্ছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই নাম উঠে আসে সত্যেন্দ্র জৈনের। এর আগেও সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় কলকাতা যোগও উঠে এসেছে। সম্প্রতি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়েছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা।
এবার দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মন্তব্য, জৈন একজন 'সৎ দেশপ্রেমিক ও জননেতা'। পাশাপাশি তিনি বলেন, " দিলির মোহল্লা ক্লিনিক' মডেলের জন্য জৈনকে 'পদ্মবিভূষণ' দেওয়া উচিত। মোহল্লা ক্লিনিক' মডেলে আজ সারা দেশের কাছেই দৃষ্টান্ত। এই প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পাচ্ছেন। এই মন্তব্যের পরেই কেজরিওয়ালকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি জৈনের প্রতি সমর্থনের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, "যারা দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সমর্থন করা মানে অন্যাইয়ের কাছে মাথানত করা"।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, "জৈনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি "সম্পূর্ণ মিথ্যা"! পাশপাশি কেজরিওয়াল বলেন জৈনের বিরুদ্ধে কোন আর্থিক নয়ছয়ের প্রমাণ থাকলে যে তিনি নিজেই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন। আগে জানুয়ারিতে সত্যেন্দ্র জৈনের বাড়িতে একাধিকবার তল্লাশই চালিয়েছিল ইডি। সেই সময় কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছিলেন, ‘সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে আপ সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে। পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হতে পারে।’
জৈনের গ্রেফতারির পর কেজরিওয়াল প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এটা ভোটের সিজন চলছে। সেই কারণেই জৈনকে গ্রেফতার করা হল।’ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির অবশ্য দাবি, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হাতে পেয়েছে।সত্যেন্দ্র জৈন কেজরিওয়াল সরকারের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ছাড়াও দিল্লির আপ সরকারের একাধিক দফতর তিনি সামলান। শুধু তাই নয়, দিল্লির প্রথম আপ সরকারেও মন্ত্রী ছিলেন জৈন। ২০১৭ সালে জৈনের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই মামলাতেই জৈনের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিল ইডি। জৈনের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও এক আত্মীয়-সহ আরও চার জন এই হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে জড়িত বলেই ইডি সূত্রে খবর। এদিকে জৈনের গ্রেফতারের দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া অভিযোগ করেন, 'হিমাচল প্রদেশ নির্বাচনে জৈনকে পরিদর্শক করা হয়েছিল, নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে"।
Read in English