ভারত বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু গণতন্ত্রের উতসব অর্থাৎ নির্বাচনে অংশ নেয় না কিয়াদংশ নাগরিক। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ রাজনীতিবিমুখ। অবশ্য ভোটদানে তাঁদের উৎসাহ দিতে ভোটিং প্যাডে জুড়েছে নোটা (নান অফ দা এবোভ) বোতাম। কিন্তু তারপরেও নোটায় ভোট পড়া মানে ভোট নষ্ট বা শাসক দলকে অ্যাডভাণ্টেজ দেওয়া। এমন একটা বিতর্ক ওঠে। এই আবহে বাংলা-সহ দেশের পাঁচ রাজ্যে ভোট।
তখনই নোটার কার্যকারিতা বাড়াতে কেন্দ্রের মত জানতে চাইল শীর্ষ আদালত। একটি কেন্দ্রে যদি বেশিরভাগ ভোট নোটায় পড়ে, তাহলে বাতিল করা হোক সেই নির্বাচন। দরকারে পরবর্তীতে ফের ভোট করা হোক। এমন দাবি তুলে শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের অবস্থান জানতে চাইল শীর্ষ আদালত।
দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়, ‘শীর্ষ আদালতের উচিত নির্বাচন কমিশনকে এই বিষযে স্পষ্ট একটি নির্দেশিকা দেওয়া।‘ আবেনদকারীর আইনজীবী মানেকা গুরুস্বামী আদালতে বলেন, ‘আমরা অস্বীকার করার অধিকারের একটি স্বীকৃতি চাইছি।’ অর্থাৎ কোনও কেন্দ্রে যদি নোটায় সর্বোচ্চ ভোট পড়ে, তাহলে বুঝতে হবে একটা বড় অংশের মানুষের কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ হয়নি। তখন সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় মেনে উচিত ভোট বাতিল করে দেওয়া।
এই প্রস্তাবের জবাবে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে, বিচারপতি এএস বোপান্না ও ভি রামাসুব্রহ্মণ্যমের বেঞ্চ বলে, ‘কোনও আসনে নির্বাচন বাতিল হয়ে গেলে সংসদে বা বিধানসভায় তো একটি আসন ফাঁকা পড়ে থাকে।’
যদিও আবেদনকারীর পক্ষে প্রশ্ন করা হয়, ‘কিন্তু কোথাও যদি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি নোটা-য় ভোট পড়ে, তাহলে তো সেটাকে গুরুত্ব দিতেই হবে। যদি ভোটের ফলে দেখা যায়, এক শতাংশ লোক একজন প্রার্থীকে পছন্দ করছেন, বাকি ৯৯ শতাংশ কাউকেই পছন্দ করছেন না, তাহলে ওই ১ শতাংশের রায়ের উপর ভিত্তি করে কি ফলাফল তৈরি হবে?’
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘‘সমস্যাটি একটি সাংবিধানিক সমস্যা। আপনার কথা মেনে নিলে, হতে পারে অনেকগুলি আসনই খালি হয়ে যাবে। আসনের প্রতিনিধি থাকবে না। এ ভাবে সংসদীয় গণতন্ত্র চলে না।’