মণিপুর হিংসা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আজ বলেছে, নিরাপত্তা এবং আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের দায়িত্ব হলেও, রাজনৈতিক দলগুলির চোখ বন্ধ করে বসে থাকা উচিত নয়। মণিপুরে হিংসার রেশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসছে।
রাজ্যের পরিস্থিতির আগের থেকে উন্নতি হচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আজ মণিপুরে হিংসার ঘটনা পরিপ্রেক্ষিপ্তে সুপ্রিম কোর্টে তাদের স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারও বলেছে, রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এখনও অশান্তি চলছে তবে শান্তি বজায় রাখার জন্য সব রমকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই মাসের শুরুর দিকে মণিপুরে যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল তার উপর একাধিক আবেদনের শুনানি করে, সুপ্রিম কোর্ট বুধবার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে যে ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত একটি নতুন রিপোর্ট আদালতের সামনে পেশ করার।
এদিকে, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, যে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোতভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, জেলা পুলিশ এবং সিএপিএফ মোট ৩১৫ টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে। রাজ্য সরকার ত্রাণ ব্যবস্থার জন্য ৩কোটি টাকার একটি তহবিল অনুমোদন করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ সাহায্য পেয়েছেন।
পাশাপাশি শীর্ষ আদালত মণিপুর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদা দেওয়ার জন্য সুপারিশ জমা দিতে বলেছে। সেই সঙ্গে সিজেআই চন্দ্রচূড় বলেন,‘মণিপুর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করতে হবে’। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট মণিপুর সরকারকে হিংসায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ত্রাণ, সুরক্ষা, পুনর্বাসন প্রদানের বিষয়ে একটি নতুন স্ট্যাটাস রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জুলাইয়ে।
এর আগে ৮ মে শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বলেছিল যে এটি একটি ‘মানবিক সংকট’। বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, ত্রাণ শিবিরে ওষুধ এবং খাবার ও পানীয়ের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি রাজ্যে ধর্মীয় স্থানগুলির সুরক্ষার জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মেইতেই সম্প্রদায়কে এসটি মর্যাদা দেওয়ার দাবির প্রতিবাদে কুকি সম্প্রদায় একটি সমাবেশ করার পরে ৩ মে, ১০টি পার্বত্য জেলায় হিংসা শুরু হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, হিংসার বলি হয়েছেন ৭১ জন। সেই সঙ্গে ২৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। হিংসার ঘটনায় প্রায় ১৭০০ ঘর-বাড়ি পুড়ে গেছে।