SC grants bail to Gautam Navlakha: ভীমা কোরেগাঁও মামলায় সমাজকর্মী গৌতম নভলাখাকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলায় বিচার শেষ হতে এখনও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। গৌতম নভলাখা চার বছরেরও বেশি সময় ধরে হেফাজতে ছিলেন। তাঁর সহ-অভিযুক্তদের মধ্যে ছয় জন ইতিমধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। সমাজকর্মীকে জামিন দেওয়ার সময় এই দিকগুলোও বিবেচনার মধ্যে রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত উল্লেখ করেছে যে এই মামলার বিচার খুব শীঘ্র শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নভলাখাকে ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি, পুনে জেলার ভীমা কোরেগাঁও গ্রামে এক হিংসার ঘটনা ঘটে। তার সঙ্গে নভলাখা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছিল।
বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ ও বিচারপতি এসভি এন ভাট্টির বেঞ্চ তাঁর জামিনের আদেশে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বম্বে হাইকোর্টের জারি করা জামিনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ বহাল রাখতে অস্বীকার করেছে। একইসঙ্গে আদালত যোগ করেছে যে, নভলাখা গৃহবন্দি থাকাকালীন তাঁর সুরক্ষার জন্য ব্যয় হয়েছিল ২০ লক্ষ টাকা। সেই অর্থ নভলাখাকেই দিতে হবে। আদালত উল্লেখ করেছে যে গৌতম নভলাখা চার বছরেরও বেশি সময় ধরে হেফাজতে আছেন। অথচ, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ গঠন করা হয়নি। এই মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ৩৭০ জন। তাই, বিচার শেষ হতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
জামিনপ্রাপ্ত সমাজকর্মীকে বিচারে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, 'প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করি যে জামিনের অন্তর্বর্তী আদেশের সময়সীমা বাড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই। আবেদনকারী চার বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন। অথচ, তাঁর বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগই গঠন করা হয়নি। হাইকোর্ট যে জামিন মঞ্জুর করেছিল, সেই আদেশই উপযুক্ত বলে এক্ষেত্রে বিবেচিত হয়েছে। বিচার শেষ হতে বছরের পর বছর সময় লাগবে। সুতরাং, আমরা জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ বাড়াতে আগ্রহী নই।'
আদালতে গৌতম নভলাখার জামিনের আদেশের বিরোধিতা করেছিল এনআইএ। এনআইএ-র আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে, গৌতম নভলাখার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো গুরুতর। আর, তাছাড়া এই মামলায় অভিযুক্তের সমস্ত সহ-অভিযুক্তকে এখনও জামিন দেওয়া হয়নি।
নভলাখাকে জামিন দেওয়ার সময় হাইকোর্ট বলেছিল যে, 'বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন, ১৯৬৭-এর ১৫ ধারার অধীনে কোনও গোপন বা প্রকাশ্য সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্তকে দায়ী করা হয়নি।' সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ভারতের নিষিদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) সদস্য। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ধারা ১৩ (বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকা) এবং ধারা ৩৮ (একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য) প্রয়োগ করা হয়েছে। নভলাখা তাঁর স্বাস্থ্যের সমস্যার কারণে আদালতের কাছে জামিন চেয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে, ২০২২ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর কঠোর শর্তসাপেক্ষে তাঁকে নবি মুম্বইয়ে গৃহবন্দি রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- গাজায় নিহত ভারতীয় সেনাকর্মী, রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই ব্যক্তি
নভলাখার জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করার সময় বিশেষ এনআইএ আদালত বলেছিল যে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে যোগসূত্রের জন্য ২০১২ সালে মার্কিন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সৈয়দ গুলাম নবি ফাইয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের একটি প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, যে কারণে নভলাখাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার সঙ্গে আইএসআই যোগসূত্রের কোনও সম্পর্ক ছিল না। এনআইএ-র দাবি, নভলাখা মার্কিন আদালতে ফাইয়ের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন।