সুপ্রিম কোর্ট ১৫ এপ্রিল প্রয়াগরাজে প্রাক্তন লোকসভা সদস্য আতিক আহমেদ এবং তার ভাই আশরাফকে পুলিশ হেফাজতে হত্যার বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে টেনে আনল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার সঙ্গে 'কেউ একজন জড়িত'। আদালতের পর্যবেক্ষণ, 'তাকে (আতিক) পাহারা দিচ্ছিল ৫ থেকে ১০ জন। সেখানে কেউ কীভাবে এসে গুলি করতে পারে? এটা কীভাবে হয়? কেউ জড়িত।' গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদের বোন আয়েশা নুরির একটি আবেদনের ভিত্তিতে আদালত উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে এই ব্যাপারে একটি হলফমা চেয়ে নোটিসও জারি করেছে। নুরি তাঁর ভাইদের হত্যার ঘটনায় আদালতের কাছে ব্যাপক তদন্তের নির্দেশ চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
শুধু আতিক আহমেদের মামলাই নয়, আদালত ২০১৭ সাল থেকে সংঘটিত উত্তরপ্রদেশে ১৮৩টি 'পুলিশ এনকাউন্টার'-এর ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্টও চেয়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের মতে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অসংখ্য পুলিশ এনকাউন্টারে ১৮৩ জন নিহত হয়েছে। যোগীর বিরোধিতাকারীরা প্রায়ই দাবি করেছে যে নিহতদের অনেককে ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যা করা হয়েছে। বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট ও অরবিন্দ কুমারের একটি বেঞ্চ শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এই এনকাউন্টারগুলোর বিশদ বিবরণ, তদন্তের অবস্থা, চার্জশিট দাখিল এবং বিচারের অবস্থা জানিয়ে একটি হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
শীর্ষ আদালত অবশ্য একইসঙ্গে আতিক আহমেদ হত্যাকাণ্ডে জনস্বার্থ মামলায় আবেদনকারী বিশাল তিওয়ারির পুলিশ এনকাউন্টার এবং এতে ইউনিফর্ম পরিহিত পুরুষদের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। আদালত এই প্রসঙ্গে বলেছে যে, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে এই ধরনের একটি কমিশন গঠন করেছে। তাই, আলাদা করে কমিশন গঠনের নির্দেশের কোনও প্রয়োজন নেই। সুপ্রিম কোর্ট এর আগে তাঁর ভাইদের 'বিচারবহির্ভূত' হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আয়েশা নুরির করা আবেদনের শুনানি করতে সম্মত হয়েছিল।
আরও পড়ুন- প্রতারণা থেকে খুন, নতুন বিলে বদলে গিয়েছে ধারার নম্বরগুলোই, জানেন কত হয়েছে?
আতিক আহমেদ (৬০) ও তাঁর ভাই আশরফকে গত ১৫ এপ্রিল পরীক্ষার জন্য একটি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথন করছিলেন। সেই সময় তিন জন ব্যক্তি সাংবাদিক সেজে মধ্যে ঢুকে পড়ে আহমেদ ভাইদের গুলি করে হত্যা করে। পুরো শুটিং লাইভ করেছিল জাতীয় টেলিভিশন।