লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের পিষে মৃত্যুর মামলায় জামিনে মুক্ত মন্ত্রী-পুত্র আশিস মিশ্র। কিন্তু, এলাহাবাদ হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা গড়িয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই বুধবার, উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইল শীর্ষ আদালত।
গত বছর ৩ অক্টোব লখিমপুরে খেরিতে কেন্দ্র বিরোধী কৃষক আন্দোল চলছিল। অভিযোগ, সেই সময়ই বেশ কয়েকটি এসইউভি গাড়ি আন্দোলনকারী কৃষকদের পিষে দিয়ে চলে যায়। এইগুলির মধ্যে ছিল কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিসের গাড়িও। তিনিও ওই গাড়িতে ছিলেন বলে জানা যায়।
এই ঘটনায় মোট আট জনের প্রাণ যায়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, চার কৃষক, দু'জন বিজেপি কর্মী, একজন গাড়ির চালক ও এক সাংবাদিক।
বুধবার দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামনার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ উল্লেখ করেছে যে, 'মনিটরিং বিচারকের রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি জামিন বাতিলের জন্য আপিল করার সুপারিশ করেছিলেন।' বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চটি ইউপি রাজ্যের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী মহেশ জেঠমালানিকে জিজ্ঞাসা করেছিল, 'আপনার অবস্থান কী?'
সুপ্রিম কোর্ট গতবছর ২১ নভেম্বর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রাকেশ কুমার জৈনকে এই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দলের পর্যবেক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছিল।
সিনিয়র আইনজীবী জানিয়েছেন যে, তিনি রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত নন, পুরো নির্দেশ দেখতে হবে। বিচারপতি সূর্য কান্ত উল্লেখ করেছেন যে, এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে বিশেষ তদন্তকারী দল দু'টি চিঠি লিখেছিল। মনিটরিং বিচারপতির প্রতিবেদনে এসব চিঠির উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। পরে আইনজীবী জেঠমালানি জানিয়েছেন যে, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব চিঠিগুলি পেয়েছেন বলে মনে হয় না এবং জবাব দেওয়ার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে।
আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুষ্যন্ত দাভে এই মামলার অভিযুক্ত আশিস মিশ্রের জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দাবি করেন ও জানান ওই রায় অযৌক্তিক। চলতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারি আশিসের জামিন মঞ্জুর করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ।
হিংসার শিকার কয়েকজনের আত্মীয় আশিস মিশ্রের জামিনের পর পরই তার চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তাঁরা দাবি করেছিল যে, মিশ্রের মুক্তির পরে ১০ মার্চ এই মামলার একজন সাক্ষীর উপর হামলা হয় এবং আক্রমণকারীরা তাকে এই বলে হুমকি দিয়েছিল যে, 'আশিস মিশ্র জামিনে রয়েছে এবং ক্ষমতাসীন দলও নির্বাচনে জিতেছে এবং আক্রমণকারীরা সাক্ষীকে দেখে নেবে।' পাল্টা রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে, ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন। হোলি খেলাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছল তা পরে হাতাহাতিতে গড়ায়। যার সঙ্গে ওই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।
Read in English