Delhi Pollution: বায়ু দূষণের কারণে দিল্লিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সোমবার অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর থেকে সেই রাজ্যে ফের খুলছে স্কুল-কলেজ। বুধবার এই ঘোষণা করেন পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই। ১৩ নভেম্বর স্কুল-কলেজ-পাঠাগার বন্ধের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে চালু ছিল অনলাইন ক্লাস।
কিন্তু দুই সপ্তাহ বাদে ফের স্কুলে ফিরবে পড়ুয়ারা। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য সরকার কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু করেছিল। সোমবার থেকে ফের অফিসে আসতে বলা হয়েছে সরকারি কর্মীদের। তবে সরকারি আবেদন, অফিস কিংবা কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতে যত বেশি সম্ভব গণপরিবহণ ব্যবহার করুক দিল্লিবাসী।
প্রায় দুই সপ্তাহ সেই রাজ্যে একাধিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলেও, এখনও খারাপ অবস্থায় দূষণ মাত্রা। এমনটাই মৌসম ভবন সূত্রে খবর। এদিকে, দিল্লি দূষণ নিয়ে কেন্দ্রের ঢিমেতাল নীতির সমালোচনায় সরব সুপ্রিম কোর্ট। এদিন ১৭ বছরের এক পড়ুয়া আদিত্য দুবের দায়ের মামলার শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতে।
এই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্নার বেঞ্চ কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘দেখুন তো এটা জাতীয় রাজধানী। দূষণ নিয়ে কী বার্তা আমরা পাঠাচ্ছি বিশ্বের কাছে। অনুমান থেকেই আপনারা বায়ু দূষণ রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারতেন। বাতাসের অবস্থা যখন খারাপ তখন আপনারা নড়েচড়ে বসলেন।‘ এমন সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের গলায়।
পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ‘মৌসম ভবনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। বাতাসের দূষণ মাত্রা যতক্ষণ না ১০০-র নীচে নামছে, কড়াকড়ি কার্যকর থাকুক দিল্লিতে।‘ অপরদিকে, দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় দূষণ রোধে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর দূষণ রোধে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে কড়া পদক্ষেপ নেবে শীর্ষ আদালত। এভাবেই কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। সাম্প্রতিক শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কি ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট পূর্বাভাস দিয়েছে আগামি দু-তিন দিনের মধ্যে হাওয়ার গতি বদলাবে। ততদিনে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে দূষণ পরিস্থিতি।‘
সেই সওয়ালের পরেই ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দেয় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, ‘এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে। তাদের বেঁধে দেওয়া বিধি কার্যকর করে বায়ু দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে।‘ পাশাপাশি সেই শুনানিতে টিভির বিতর্কসভার প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। বেঞ্চের মন্তব্য, ‘টিভির বিতর্কসভা থেকে বেশি দূষণ ছড়ায়। যারা অংশ নিয়ে থাকেন, প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত থাকে। আশপাশের কোনও খবর না রেখেই বিতর্কে বসে পড়েন। আর বিষয় বহির্ভূত মন্তব্য পেশ করেন। যদিও এব্যাপারে আমাদের কিছু করনীয় নেই, তাই যেখানে নিয়ন্ত্রণ করার সেদিকেই আমরা নজর রাখছি।‘
এদিকে, ভয়াবহ পরিস্থিতি দূষণের জেরে। বাতাসে বিষের কারণে পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত দিল্লি-এনসিআর এলাকায় বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল-কলেজ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পড়াশোনা হবে ফের অনলাইনে। সরকারি অফিস-কাছারিতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হবে। বাকিদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। ১৩ নভেম্বর এমনই নির্দেশিকা জারি করেছিল ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের (এনসিআর) কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন