তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন রোধ আইন ২০১৮ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নাকচ করার জন্য সংসদে তফসিলী জাতি-উপজাতি আইন সংশোধন করেছিল সরকার। সংশোধিত আইন যে সংবিধানসম্মত সেকথা মেনে নিল সুপ্রিম কোর্টই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ বলে, দলিতদের ওপরে নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে প্রাথমিক তদন্ত না করেই এফআইআর করা যায়। সেজন্য কোনও উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারের অনুমোদন আবশ্যক নয়।
তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের উপর নিগ্রহ রুখতে ১৯৮৯ সালে ওই আইন তৈরি করেছিল তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকার। ২০১৫-য় সেই আইনে সংশোধনী আনা হয়। সেখানে এই আইনকে আরও বেশি সক্রিয় করা হয়েছিল। উচ্চবর্ণের কেউ তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের কারও মাথা বা গোঁফ কামিয়ে দেন, কাউকে যদি দলিত বলে অপমান করেন, সেই ঘটনাকেও জামিন অযোগ্য অপরাধের আওতায় আনা হয় ওই সংশোধনীতে।
ওই তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন রোধ আইন নিয়ে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দিয়েছে, এই সংক্রান্ত কোনও মামলা রুজু করার আগেই প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে। এমনকী, অভিযুক্তকে আগাম জামিনও দেওয়া যেতে পারে। আর এই রায়েই কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপি-র দলিত নেতারাও ক্ষুব্ধ। তাঁদের মতে, দলিতদের হাতে আগে যে অধিকার ছিল শীর্ষ আদালতের রায়ে তা খর্ব হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছিল, মোদী সরকার এই প্রসঙ্গে আদালতে কোনও বিরোধিতা করেনি।
ওই আইনের অপপ্রয়োগের অভিযোগ জানিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই সরব ছিল উচ্চবর্ণদের কয়েকটি সংগঠন। ওই আইনের ধারায় অভিযোগ দায়ের হওয়া কতগুলি মামলা শেষ পর্যন্ত ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়েছে আদালতে।
বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠলে সরকার আদালতে জানায়, রাজীব গান্ধীর আমলে তৈরি এই আইনের অপব্যবহার বন্ধ হওয়া উচিত। এর পরে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে, তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের উপর নিগ্রহ সংক্রান্ত মামলা দায়েরের আগে প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে। অভিযুক্তের আগাম জামিনের বিষয়টিতেও সায় দেয় আদালত।
Read the full in English