এসসি-এসটি আইন লঘু করার অভিযোগ ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছিল কিছুদিন আগেই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন দলিত শ্রেণির মানুষরা। যে বিক্ষোভে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছিল। এদিকে দলিতদের মন পেতে তড়িঘড়ি দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। গত ২০ মার্চের রায়ই বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত। এবার বিজেপি শাসিত ৩ রাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ই মান্যতা পাচ্ছে। ফলে, এই ইস্যুতে শাসক শিবিরের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়, বিজেপি শাসিত এই ৩ রাজ্যে এসসি-এসটি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রশাসনের কাছে শীর্ষ আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ৩ রাজ্যের সরকার। অন্যদিকে হিমাচল প্রদেশ সরকার এ বিষয়টি সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের রায় সে রাজ্যের পুলিশকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে হরিয়ানা সরকার এসসি-এসটি আইন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে ।
এদিকে কংগ্রেস শাসিত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানা গেছে। তফশিলি সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য যে পাঞ্জাব সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ, সেকথা গত ১ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছিল পাঞ্জাব বিধানসভা।
আরও পড়ুন, দলিত নিয়ে নির্দেশে স্থগিতাদেশ নয়, স্পষ্ট জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্রের আবেদন খারিজ শীর্ষ আদালতে
পাঞ্জাবের মতো আরেক কংগ্রেস শাসিত রাজ্য কর্নাটকে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিয়ে প্রাথমিক ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে এসসি-এসটি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কেরালার বাম সরকার। পশ্চিমবঙ্গে এ সংক্রান্ত রায় নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সে রাজ্যের এডিজি সিআইডি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় পড়ার পরই এ ব্যাপারে মন্তব্য করবেন। এসসি-এসটি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে গত ৬ এপ্রিল ছত্তিসগড় পুলিশের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে ছত্তিসগড়ের কংগ্রেস নেতা পি এল পুনিয়া বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন এসসি-এসটি আইন লঘু করতে দেবেন না, এদিকে ছত্তিসগড়ে সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পুনিয়ার দাবি, এতেই বোঝা যায়, বিজেপি দুরকম কথা বলে। বিজেপি প্রতারক বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর অপরাধ বিষয়ক আইনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের গ্রেফতারি থেকে বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে দলিতদের অভিযোগ, এসসি-এসটি আইন লঘু করা হয়েছে। তার জেরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। দেশজুড়ে বিক্ষোভে শামিল হন দলিত শ্রেণির মানুষরা, দেশব্যাপী বনধে হিংসায় প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন, ক্ষতি হয় প্রভূত সম্পত্তির।