পয়লা মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় দফার গণটিকাকরণ। পঞ্চাশোর্দ্ধ এবং ৪৫ বছরের ওপরে যাঁরা, তাঁরা পাবেন এই টিকা। আর কোমর্বিডিটি যাঁদের আছে, ৪৫-এর ওপরে তাঁরাই পাবেন টিকা। তবে কীভাবে তৃতীয় পর্যায়ের গণটিকাকরণে নাম নথিভুক্ত হবে? অনুসরণ হবে কোন পদ্ধতি? সে নিয়ে শুক্রবার রাজ্যগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই বৈঠকে উল্লেখ, পরিকাঠামো খাতে প্রয়োজনে টিকা পিছু সর্বোচ্চ ১০০ টাকা চার্জ করতে পারে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ এবং টিকা কমিটির প্রধান চিকিৎসক আর এস শর্মা রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবদের সঙ্গে এই বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে বলা হয়েছে, দেশের প্রবীণ নাগরিক অর্থাৎ ষাটোর্দ্ধ এবং ৪৫-৫৯ বছরের মধ্যে যারা কোমর্বিডিটির শিকার, তারা এই দফায় টিকা পাবেন। তবে, এই দফায় টিকা নিতে তিন ভাবে নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
১) স্বনথিভুক্তিকরণ: অর্থাৎ কো-উইন ২.০ অ্যাপ কিংবা আরোগ্য সেতুর মাধ্যমে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন
২) অনসাইট রেজিস্ট্রেশন: টিকা কেন্দ্রে সশরীরে গিয়ে বয়সের প্রামাণ্য নথি-সহ নাম নথিভুক্তকরণ
৩) কো-হর্ট রেজিস্ট্রেশন: এই তালিকাভুক্তরা আশা কর্মী, পঞ্চায়েত-জেলা পরিষদ অফিসের কর্মী এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। এই ব্যক্তিদের টিকাকরণের জন্য পৃথক দিন ধার্য হবে। সেই দিন রাজ্যগুলোকে আগামি দিনে জানিয়ে দেবে কেন্দ্র।
এই বৈঠকে এভাবে পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে রাজ্যগুলোকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
এবিষয়ে, ন্যাশনাল হেলথ অথরিটির সিইও আর এস শর্মা বলেন যে এই টিকাদানের লক্ষ্য হল পরবর্তী পর্যায়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে ২ কোটি ভারতীয়কে রক্ষা করা। সে ভাবেই এই ‘নাগরিক কেন্দ্রিক মডেল’টি তৈরি করা হয়েছে। তবে এবার ভ্যাকসিনেশন হবে সব সতর্কতা মেনেই। আর এস শর্মা বলেন, “আপনার বয়স যদি ৬০ বছর বা তার বেশি হয় তবে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হবে না। ৪৫ বছরেরও কম বয়সীদের জিজ্ঞাসা করা হবে। টিকা দেওয়ার সময় প্রেসক্রিপশন নিতে হবে। ছবিও তোলা হবে এবং সিস্টেমে আপলোড করতে হবে।”
সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে নাম নথিবদ্ধ করাতে হবে। সেই নথিভুক্তিকরণ আবার স্থানীয় প্রশাসনিক স্তরে মিলিয়ে দেখা হবে। কো-উইন অ্যাপের মারফত বয়সের প্রমাণপত্র যাচাই হলে ওই অ্যাপেই কবে, কোথায় টিকা দেওয়া হবে, তা জানা যাবে। প্রয়োজনে টিকা দেওয়ার কেন্দ্র এবং টিকার দিনও ইচ্ছে অনুযায়ী গ্রহীতারা ঠিক করে নিতে পারবেন।
৪৫ বছরের উপর এবং কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁরা কী করবেন? রাজ্যের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কিডনি সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন অথবা যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ সমস্যা আছে, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এদিকে ভারতে করোনার নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কেরল, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়ে যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, তাতে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (সেকেন্ড ওয়েভ) আছড়ে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন