ভারতের একাধিক সংবাদপত্র এর আগে একাধিকবার গোপন তথ্য ফাঁস করেছে, কিন্তু ১৯২৩ সালে লাগু হওয়া অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় কেউ পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দেয় নি। এমনটাই বললেন দ্য হিন্দু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এন রাম। কয়েকদিন আগেই অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, বিতর্কিত রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে চুরি করা নথির ভিত্তিতে, এবং দুটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘ধরে নিলাম চোর এসে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে রাফালের নথি’
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টকে "জঘন্য আইন" আখ্যা দিয়ে রাম বলেন, এই আইন ব্রিটিশ আমলে ব্যবহার করা হতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে। কোনো প্রকাশনার বিরুদ্ধে এটির ব্যবহার অত্যন্ত বিরল বলে দাবি করেন তিনি। "এর আগেও অজস্র গোপন নথিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। আমার মনে আছে, ১৯৮১ সালে আমি 'দ্য হিন্দুর' ওয়াশিংটন সংবাদদাতা ছিলাম, যখন আমরা ভারত এবং ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল)-এর মধ্যে আলোচনা সংক্রান্ত বহু গোপন নথি প্রকাশ করি। দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল বহুমুখী লাইন অফ ক্রেডিট নিয়ে, যার পরিমাণ সেই যুগে ছিল ৬.৩ বিলিয়ন ডলার, যা তখন পর্যন্ত ছিল অশ্রুতপূর্ব। তখন তো কেউ বলে নি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের কথা। বোফর্স কেলেঙ্কারির সময় আমরা ২৫০টি নথি প্রকাশ করি, যার মধ্যে প্রচুর সরকারি নথিও ছিল। কোনো প্রকাশনার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের হুমকি শোনা যায় নি।"
রাম উদাহরণ স্বরূপ আরও বলেন, উকিল প্রশান্ত ভূষণ কয়লা ব্লক বণ্টন কেলেঙ্কারি নিয়ে বিভিন্ন আদালতে অনেক গোপন নথি জমা করেন। "কোনো আদালতের সেই নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখতে কোনো অসুবিধে হয়নি। কারো মাথাতেও আসে নি প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ব্যবহার করার কথা। এই প্রথম এরকম কিছু ঘটল, তাও সুপ্রিম কোর্টে।"
আরও পড়ুন: রাফাল তথ্য চুরি প্রসঙ্গে সরকারি হুমকির বিরুদ্ধে সংবাদ মহলের গর্জন
চুরি যাওয়া নথিপত্র সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেলের দাবি প্রসঙ্গে রাম বলেন, যা ঘটছে তাকে "ট্র্যাজি-কমেডি" বলা যায়। "ওঁরা বললেন নথিপত্র চুরি হয়ে গেছে, কাজেই সবাই ভাবলেন একেবারে আক্ষরিক অর্থেই চুরি হয়েছে। এখন ওঁরা বলছেন ফোটোকপি করা হয়েছে…আমার মনে হয় সরকারের পক্ষে ব্যাপারটা একটু অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
'মুম্বই কালেকটিভ' নামে একটি সংস্থার আয়োজিত এক আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে মুম্বই আসেন রাম। আলোচনার শীর্ষক ছিল 'রাফাল: মোদীর নেমেসিস?' অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।