রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিতর্কিত আইনের শুনানিতে এবার সুপ্রিম কোর্ট জানতে চাইল, বকেয়া মামলাগুলো সম্পর্কে। এই মামলা যতদিন না-শেষ হয়, রাজ্যগুলোকে কি রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা করতে নিষেধ করবে কেন্দ্র? মঙ্গলবার কেন্দ্রের কাছে এমনটাই জানতে চাইল শীর্ষ আদালত।
ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইন। যা সংবিধানের ১২৪এ ধারা নামে পরিচিত। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বিপ্লবীদের এই আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বারবার এই আইনের অপব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রে এবং বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সেই অপব্যবহার আরও বেড়ে গিয়েছে। যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পর্যালোচনা করে দেখতে শীর্ষ আদালতের কাছে আরও সময় চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
পালটা মামলাকারীর আইনজীবী গোপাল শংকরনারায়ণ বলেছিলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর যাতে নিষ্পত্তি না-হয়, তার জন্য অতিরিক্ত সময় চাওয়া কেন্দ্রের বাহানা হয়ে উঠেছে।' তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ত্সনা করে আদালত। বিচারপতি বলেছিলেন, ' কেন্দ্র বলছে পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু, আমরা অনর্থক সময় নষ্ট করতে দিতে পারি না। একজনকে মাসের পর মাস জেলে ফেলে রেখে দেওয়া কি উচিত? এতে নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষা হবে কীভাবে?'
আরও পড়ুন- জঙ্গিপনা কমেছে, শীঘ্রই গোটা অসম থেকেই প্রত্যাহার হবে আফস্পা, আশাবাদী শাহ
মঙ্গলবার সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বুধবার পর্যন্ত সরকারকে সময় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না-করা পর্যন্ত এই আইনের প্রয়োগ আপাতত স্থগিত রাখা যায় কি না, ওই আইনে গ্রেফতার হওয়া সকলের অধিকার রক্ষা করা যায় কি না, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-নেওয়া পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ওই আইন প্রয়োগ করা যায় কি না, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে কেন্দ্রকে। আর, সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজ্যগুলোকে নির্দেশ পাঠাতে হবে।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে উদ্দেশ্য করে আদালতে তিন সদস্যের বেঞ্চের অন্যতম সদস্য বিচারপতি সূর্যকান্ত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, 'মিস্টার মেহতা, আপনি দু'মাস নেবেন, তিন মাস নেবেন, কতটা সময়, আমরা কিন্তু চূড়ান্ত কিছুই জানি না। এখনও পর্যন্ত কেন এটা পরিষ্কার করবেন না? আপনি আপনার কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রকের মাধ্যমে রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিন যে ততদিন পর্যন্ত এই আইন প্রয়োগ স্থগিত থাকবে।' বিচারপতির এই উষ্মার পর সলিসিটর জেনারেল জানা, তিনি এই নির্দেশের কথা জানিয়ে দেবেন।
Read story in English