রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখে ভারতীয় নাগরিকত্বের দাবি জানিয়েছেন পাক যুবতী সীমা হায়দার। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন। এবং সেগুলির অবদানও তার জীবনে অপরিসীম। তিনি এমন সময়ে আবেদন করেছেন যখন তাকে পাকিস্তানে ফেরানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি ভারতে থাকার দীর্ঘমেয়াদী ভিসারও আবেদন করেছেন তিনি। বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে তার বিয়েকে বৈধ বলে বিবেচনা করা উচিত এমনটাও জানান হয়েছে সীমার চিঠিতে।
প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে নেপাল হয়ে নয়ডায় পালিয়ে আসেন পাকিস্তানের সীমা হায়দার। সম্প্রতি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইউপি ATS। পাকিস্তানি যুবতী সীমা হায়দারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। সীমার প্রেমিক শচীনের বাবা জানান, সীমা ও শচীনের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। সীমা কথা বলতেও পারছে না। গ্রামের এক চিকিৎসককে সীমার বাড়িতে এসে তাঁকে পরীক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। শচীনের বাবা শচীন নেত্রপাল জানান, রাত থেকেই সীমা খুবই দুর্বল বোধ করছেন। সে কথা বলতেও পারছে না।
এটিএস-এর জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে শচীনের বাবা বলেন, তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমি কি সীমাকে পুত্রবধূ বানিয়ে খুশি? আমি তাদের বলেছিলাম যে সীমাকে আমার পুত্রবধূ হিসেবে পেয়ে আমি এবং আমার পুরো গ্রাম খুশি।
ইউপি ATS সম্প্রতি সীমা হায়দার এবং শচীনের পাশাপাশি শচীনের পরিবারের সদস্যদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করে। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমাকে এ পর্যন্ত করা জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বলা যাবে না যে তিনি পাকিস্তানি গুপ্তচর। তবে কিছু প্রশ্নের উত্তরে ATS সন্তুষ্ট নয়। সীমা ছাড়াও তার প্রেমিক শচীনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শিগগিরই সীমাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে। সীমা বলেন, তাকে পাকিস্তানে পাঠানো হলে সে বাঁচবে না। এর মাঝেই সীমা ও শচীনের বিয়ের ছবিও সামনে এসেছে। নেপালের একটি মন্দিরে তাদের দুজনেরই বিয়ে হয়। এরপর দুজনেই ভারতে আসেন।
২০১৯ সালে অনলাইন গেম PUBG খেলার সময় সীমা এবং শচীন একে অপরের সংস্পর্শে আসেন। এর পরে পাকিস্তানি মহিলা তার দেশ ছেড়ে গ্রেটার নয়ডায় শচীনের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সীমাকে ঘিরে ক্রমেই দানা বাঁধছে রহস্য। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে সীমা হায়দরের কোনও যোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস। জানা গিয়েছে সীমার কাকা এবং দাদা পাক সেনা বাহিনীতে কর্মরত।
অনলাইন গেমের মাধ্যমে প্রেম। তারপরে তার প্রেমিকের জন্য দেশ ছেড়ে হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভারতে আসেন পাক মহিলা। সম্প্রতি শিরোনামে আসা এই প্রেমের কাহিনী অবাক করেছে সকলকে। মহিলা পাকিস্তানের বাসিন্দা এবং ইতিমধ্যে বিবাহিত। মহিলার চার সন্তানও রয়েছে।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে, সীমা করাচি থেকে নেপাল এবং নয়ডা থেকে শচীনও নেপালে পৌঁছেছিলেন। নেপালে অনেক দিন একসঙ্গে ছিলেন দুজনেই। এর পর সীমা পাকিস্তানে ফিরে যান এবং শচীনও ভারতে ফিরে আসেন। এরপর করাচিতে ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে ভারতে আসার পরিকল্পনা করেন সীমা।
নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন সীমা। ১৩ মে নেপাল হয়ে গৌতম বুদ্ধ নগরের রবুপুরা এলাকায় শচীনের বাড়িতে পৌঁছান সীমা। নয়ডা পুলিশ জানিয়েছে, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের জৈসমাবাদের বাসিন্দা সীমা হায়দার প্রথম বিয়ে করেছিলেন ২০১৪ সালে গোলাম রাজার সঙ্গে। গোলাম করাচিতে থাকতেন। ২০১৯ সালে কাজের জন্য সৌদি আরবে গিয়েছিলেন গোলাম। দুজনেরই তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে যাদের বয়স সাত বছরের নিচে।