এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক পুলিশ অফিসারের ছেলেকে। সম্প্রতি একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে স্যোশাল সাইটে। সেখানে দেখা গিয়েছে চুলের মুঠি ধরে ওই তরুণীকে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁকে কিল, চড়ের সঙ্গে সঙ্গে পেটে লাথিও মারা হয়। করা হয় গালিগালাজও।
পুলিশ সূত্রে খবর, বন্ধুর অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক তরুণীকে বেধড়ক মারধর করে দিল্লির এক পুলিশকর্তার ছেলে রোহিত সিংহ তোমর। শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় রোহিতকে। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ সেপ্টেম্বর। ওই দিন বিকেল তিনটে নাগাদ দিল্লির উত্তম নগর এলাকার একটি বিপিও-তে ওই ঘটনা ঘটে। বিপিওটি চালান রোহিতের বন্ধু আলি হাসান। ওই তরুণী বিপিওতে গিয়েছিলেন চাকরির খোঁজেই। প্রসঙ্গত, একটি কল সেন্টারে কাজ করত রোহিত। তবে এখন কোনও কাজ করে না সে। রোহিতের বাবা দিল্লি পুলিশের (মধ্য) নারকোটিক্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর অশোক সিংহ তোমর।
ভিডিওটি স্যোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে দিল্লি পুলিশ কমিশনার অমুল্য প্রান্তিকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। একটি টুইটে তিনি বলেন, "এক তরুণীকে নির্মমভাবে মারধর করার বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে ফোনে বলেছি বিষয়টি, ওই তরুণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
আরও পড়ুন: কীভাবে মারা গেল পাঁচ বছরের অর্কাভ?
শুধু তাই নয়, আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে রোহিত তোমরের বিরুদ্ধে। ২২ বছর বয়সী এক তরুণী জানান, এই ভিডিওটি দেখিয়ে তাঁকে রীতিমতো হুমকি দিত তোমর। প্রায়ই তাঁকে বলা হত, ওই তরুণী যদি তোমরকে বিয়ে না করেন, তবে তাঁরও এমনই অবস্থা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় একবছর ধরে একটি সম্পর্কে ছিলেন রোহিত এবং ওই তরুণী। এই ঘটনার পরই শুরু হয় তাঁকে বিরক্ত করা। প্রায়ই বিয়ের জন্য হুমকি দিত রোহিত। ওই তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, তিনি এবং তাঁর বাবা রোহিতের বাবার কাছেও এই বিষয়টি জানিয়েছেন। এ ছাড়াও অভিযোগে লিখিতভাবে ওই তরুণী জানান, ''আমায় সবার সামনে হুমকি দিয়ে বলা হত, আমি যদি ওকে বিয়ে না করি তবে কোনওদিন কোথাও আমার বিয়ে হতে দেবে না রোহিত। কাজের জন্য আমায় রাস্তায় বেরোতে হয় এবং অনেক রাতে ফিরতে হয়। আমি আমার প্রানের আশঙ্কা করতাম।"
মারধোরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় এবং ২২ বছরের ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬, ৩২৩, ৩৫৪, ৫০৯, ১০৭ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় রোহিতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।