সীমান্ত বিতর্ককে কেন্দ্র করে ভারত-চিন উত্তেজনা অব্যাহত। এই আবহে চিনাদের এ দেশের ভিসা ছাড়পত্রের বিষয়টি আঁটোসাঁটো করেছে নয়াদিল্লি। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, ব্যবসায়ী ও পরামর্শদাতা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ভিসা দেওার ক্ষেত্রে আগেই সব দিক খতিয়ে দেখে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সরকারি এক নোটে বিদেশমন্ত্রককে জানানো হয়েছে যে, যেসব চিনা ব্যক্তি বা সংস্থার অস্তিত্বের সঙ্গে উদ্বেগ জড়িত রয়েছে বলে মনে হচ্ছে- এ দেশে তাঁদের বা সেই সংস্থার কার্যকলাপ নজরদারিতে থাকবে। এ ক্ষেত্রে ভিসা দেওয়ার আগেই নিরাপত্তার বিষয়টি যাচাই করে যেন ভিসা ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই রকম ক্ষেত্রে সরকার দিল্লিতে থেকে ভিসা ছাড়পত্র দেবে।
জুলাই মাসের শেষের দিকে বিদেশমন্ত্রককে জানানো হয় যে, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, ব্যবসায়ী গোষ্ঠীদের নিয়ে চিন বিশ্বব্যাপী আউটরিচ সিস্টেম তৈরি করেছে। চিনা কৌশলগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিভিন্ন দেশে এই আউটরিচ সিস্টেমকে কাজে লাগানো হয়। এই সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা অন্যান্য দেশের নীতি প্রণয়নকারী, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন নেতৃত্ব, কর্পোরেট, শিক্ষাবিদ সহ নানা গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। বহু ক্ষেত্রে আউটরিচ সিস্টেমের সদস্যরা গুপ্তচরবৃত্তির কাজও করে।
পাকিস্তানীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে আগে থেকেই এই ধরনের কড়া ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে। এবার লাদাখে সীমান্ত বিতর্ককের আবহে চিনাদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম লাগু হয়েছে।
আইআইটি, বেণারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, জেএনইউ সব ভারতের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চিনা প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। সেই সহ চুক্তিও এবার পর্যালোচনা হবে বলে দ্য ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন। তবে, ম্যান্ডারিন ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে চুক্তির নিয়ম বিধি কিছুটা শিথিল থাকতে পারে।
সরকারি শীর্ষস্তর থেকে চিনা সংস্থার সঙ্গে এ দেশের নানা চুক্তি ৩৬০ ডিগ্রি পর্যালোচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে চিন থেকে ভারতে ওষুধের উপদান আমদানির বিষয়টি উদ্বেগের অন্যতম কারণ বলে জানান সরকারি আধিকারিক। বেজিংয়ের যে কোনও পদক্ষেপে এ দেশে ওষুধের ঘাটতি বা মূল্য বৃদ্ধি হতে পারে।
এই আমদানি নির্ভরতা কীভাবে কমানো যায় তার উপর কাজ চালাচ্ছে একটি স্টাডি গ্রুপ। যদিও, স্বল্পমেয়াদে নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা বেশ দুরুহ বলেই মনে করেন ওই সরকারি আধিকারিক। ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারীরা চিন থেকে ৬৫ শতাংশ কাঁচা মাল আমদানি করেন, যা প্রায় ৩.৫ বিলিয়ান মূল্যের।
লাদাখে সংঘাতের পর পরই নয়াদিল্লি টিকটক, ইউসি ব্রাউজার সহ এ দেশে ৫৯ চিনা অ্যাপ বাতিল করেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, সুরক্ষার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ বলে ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন