গতবছর সম্ভাব্য বেআইনি গোহত্যার প্রেক্ষিতে জনরোষে নিহত এক পুলিশ অফিসারের পরিবার সোমবার দাবি জানিয়েছেন, জেলে ফেরত পাঠানো হোক কয়েকদিন আগে জামিনে মুক্তি পাওয়া অভিযুক্তদের। উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় ছাড়া পাওয়ার পর তাঁদের 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দিয়ে অভিনন্দন জানান অভিযুক্তদের সমর্থকরা। সঙ্গে ছিল 'ভারত মাতা কি জয়' ও 'বন্দে মাতরম' স্লোগানও।
এই ঘটনার একটি ভিডিওর প্রেক্ষিতেই পরিবারের এই দাবি। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুজন অভিযুক্ত - বিজেপি যুব শাখার নেতা শিখর আগরওয়াল এবং জিতু ফৌজি নামের আরও একজনকে রীতিমত উৎসবের আমেজে গলায় মাল্যদান করছেন উৎফুল্ল সমর্থকরা, মুহুর্মুহু শোনা যাচ্ছে স্লোগান।
আরও পড়ুন: বুলন্দশহর কাণ্ডে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন
উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাঁর দল বা রাজ্য সরকারের এই ঘটনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, "জেল থেকে কেউ ছাড়া পাওয়ার পর যদি তাঁদের সমর্থক অথবা আত্মীয় পরজন স্বাগত জানান, তার সঙ্গে রাজ্য সরকার অথবা বিজেপি-র কোনও সম্পর্ক নেই। বিরোধীরা এসব ঘটনাকে অতিরঞ্জিত না করলেই ভালো।"
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মহাও গ্রামের কাছে কিছু হাড়গোড় পাওয়া যায়। এই আবিষ্কারের পরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়, এবং জনরোষের মুখে পড়ে প্রাণ হারান ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার সিং, সেসময় পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছিল।
লখনৌয়ের এক আদালত শনিবার জামিনে মুক্তি দেয় ছয়জন অভিযুক্তকে। এঁদের সাদর অভ্যর্থনা জানানোর ঘটনা সম্পর্কে নিহত পুলিশ আধিকারিকের পুত্র শ্রেয় প্রতাপ সিং সোমবার বলেন, এই ধরনের মানুষের জেলের গরাদের পেছনেই থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: বুলন্দশহর: সুবোধ সিংয়ের মোবাইল ফোন মিলল মূল অভিযুক্তের বাড়ি থেকেই
"আমি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বলব যে এইসব অপরাধী, যারা ছমাস জেলে ছিল, তাদের সমাজের স্বার্থে জেলেই রাখা উচিত। একবার যারা অপরাধ করেছে, তারা আবার করতে পারে। আমার বিশ্বাস, এই ধরনের মানুষের জেলেই থাকা উচিত, আমার জন্য শুধু নয়, সবার জন্যই," বলেন শ্রেয়। নিহত সুবোধ কুমারের স্ত্রীরও প্রশ্ন, কীভাবে অভিযুক্তরা "স্রেফ ছমাসের মধ্যে মুক্তি পেল"।
গতবছরের জনরোষের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যান ইন্সপেক্টর সিং, এবং প্রায় ৪০০ লোকের সামনে পড়েন তিনি। তাঁর ওপর আক্রমণের একটি ভিডিওতে গুলি ছুড়তে দেখা যায় একদল লোককে, সঙ্গে ওঠে চিৎকার, "গোলি মারো"। এই ভিডিওর জেরে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সব মহলেই, এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে ঘটনার তদন্তের ভার নেয় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল।