দেশজুড়ে কমতে শুরু করেছে করোনা দাপট। তবে উদ্বেগ জারী রেখেছে মৃতের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড পজিটিভ ২৭ হাজার ৪০৯ জন। সোমবারের তুলনায় যা প্রায় ২০ শতাংশ কম। মৃত্যু হয়েছে ৩৪৭ জনের। এদিকে তৃতীয় ঢেউকালে যত সংখ্যক মানুষ করোনার বলি হয়েছেন তা সিংহ ভাগই প্রবীণ নাগরিক। বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি) জানিয়েছে যে নতুন বছরের শুরু থেকে মোট ৩০৪ টি মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে তার মধ্যে ৮৭ শতাংশই প্রবীণ নাগরিক। বিএমসির এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রথম দুটি ঢেউয়ের মতই করোনার তৃতীয় ঢেউকালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় প্রাণ হারিয়েছেন কোর্মিবিডিটি যুক্ত প্রবীণ নাগরিক। বিএমসি’র তথ্য অনুসারে ৩০৪টি মৃত্যুর মধ্যে ২৬০টি অর্থাৎ ৮৭ শতাংশ’ই কোমির্বিডিটি যুক্ত প্রবীণ নাগরিক। ১০ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে চারটি মৃত্যু এবং ৯ বছরের নীচে কোভিডের বলি হয়েছেন একজন।
বিএমসি’র তরফে জানানো হয়েছে বেশিরভাগ মৃতদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সহ-অসুস্থতা ছিল। বিএমসি’র থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে জানা গেছে যে এই বছর ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সীদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে ৫০ থেকে ৫৯ বয়সীদের মধ্যে ১৯ জন মারা গেছেন, ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ৮২ জন মারা গেছেন। তথ্য অনুসারে ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে ৬৩ জন এই মারণ ভাইরাসের বলি হয়েছেন। এবং ২৬ জন মানুষ এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন গেছেন যাদের বয়স ৯০ বছরের বেশি।
এদিকে মৃত্যু’র এই পরিসংখ্যানের পাশাপাশি উঠে এসেছে এক ভয়ঙ্কর তথ্য। দেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষের বেশি বয়স্ক জনসংখ্যার মানুষ এখনও টিকার একটি মাত্র ডোজও পান নি। সরকারি তথ্য অনুসারে দেশের প্রবীণ নাগরিকের মোট ১০ শতাংশ মানুষ এখনও কোভিড টিকার একটি মাত্র ডোজও পাননি। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুসারে ষাটোর্ধ মোট ১২ কোটি ৫৮ লক্ষ ৩৬৮ জন তাদের প্রথম টিকার ডোজ পেয়েছেন।
অন্যদিকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন এমন সংখ্যা ১০ কোটি ৯৫ লক্ষ ৭৯ হাজার ১২৮ জন। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতে ষাটোর্ধ মানুষের সংখ্যা ১৩ কোটি ৮০ লক্ষ। সেই সংখ্যা অনুসারে দেশের প্রায় ১ কোটি ২ লক্ষের বেশি ষাটোর্ধ ব্যক্তি এখনও টিকার একটিও ডোজ পাননি। এই পরিসংখ্যান রীতিমত ভয় ধরানোর মতোই। যেখানে করোনা থেকে বাঁচার জন্য বারবার টিকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন চিকিৎসকরা সেখানে এত সংখ্যক ষাটোর্ধ ব্যক্তি কিভাবে টিকার আওতার বাইরে রইলেন উঠেছে প্রশ্নও।