কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল দেশ। পথ অবরোধ থেকে শুরু করে ট্রেন জ্বালানো বাকী ছিল না কিছুই। তবে অগ্নিপথ প্রকল্পে ৪ বছরের জন্য হলেও সেনার উর্দি গায়ে তুলতে পারলে খুশি তরুণ প্রজন্ম। তাদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন সারাজীবন বেকার থাকার থেকে চার বছরের জন্য সেনার হয়ে কাজ করে সসম্মানে বাঁচা অনেক বেশি গর্বের। একই সঙ্গে আনন্দেরও।
তেমনই একজন, বছর ২২-এর লাভপ্রীত সিং। সবে গ্র্যাডুয়েশন সম্পূর্ণ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছেন। তার কথায়, “ “ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করা আমার কাছে একটা স্বপ্ন, তা যদি চার বছরের জন্য হয় তাতে কিছু যায় আসে না। আমি শুধু ইউনিফর্ম পরার অনুভূতি অনুভব করতে চাই, আমাদের দেশের সেবা করার জন্য,আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই”। অনেক রাজ্যের মধ্যে পাঞ্জাবও অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল।
রাজ্যের চারটি জেলা - লুধিয়ানা, রূপনগর, মোহালি এবং মোগা থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজারের বেশি তরুণ অগ্নিপথ প্রকল্পে নাম লিখিয়েছেন। একজন সেনা কর্মকর্তা এপ্রসঙ্গে বলেন, আমরা পাঞ্জাবের চারটি জেলা থেকে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি আবেদন পেয়েছি। যা ২০২০ সালের থেকেও বেশি। তিনি বলেন, কোভিডের কারণে গত ২ বছর নিয়োগ বন্ধ ছিল সেকারণে আমরা তরুণদের মধ্যে আরও বেশি উৎসাহ লক্ষ্য করেছি।
আরও পড়ুন: < সাতসকালেই কেঁপে উঠলো লখনউ, আতঙ্কে রাস্তায় আম-আদমি >
অপর একজন তরুণ গুরপ্রীত সিং বলেন, “ আমি তিন বছর ধরে সেনাবাহিনীতে যোগ দেব বলে প্রস্তুতি চালাচ্ছি। বাবা একজন সামান্য রাজমিস্ত্রি। নতুন স্কিম চালু হয়েছে আমি সেনাবাহিনীতে যোগদানে ইচ্ছুক। এর আগেও আমি শারীরিক পরীক্ষায় পাস করি, আবারও আবেদন করেছি”। বছর ১৯-এর প্রদীপ কুমার শর্মা অগ্নিপথ স্কিম নিয়ে বলার সময় বলেন, ‘যখন প্রথমে এটা শুনি, তখন প্রাথমিক ভাবে এটা আমাদের কাছে একটা ধাক্কা ছিল! তবে অনেকেই এই প্রকল্পের অপব্যাখ্যা করেছেন। বেকার হয়ে বসে থাকার চেয়ে চারবছর দেশের সেবা করা গর্বের সেই সঙ্গে সম্মানেরও। সর্বোপরি সেনা মানেই একটা আবেগ আমার কাছে”।
নরিন্দর পাল সিং (১৯) জানান, “ভাই কানাডায় ট্রাক চালকের কাজ করেন, বোনও বিদেশে চলে গিয়েছে। বাবাও দুবাইতে কাজ করেন। কিন্তু আমি দেশ ছাড়তে চাইনা। আমি দেশের জন্য কাজ করতে চাই। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া আমার কাছে একটা স্বপ্ন। তিনি বলেন, “পাঞ্জাবের বেশিরভাগ যুবক বিদেশে যাচ্ছে। বিদেশিদের দাসত্ব করা থেকে দেশের জন্য কাজ করা অনেক ভাল”।
নতুন নিয়োগ নীতিতে চার বছরের নিয়োগ পরিষেবা শর্ত রয়েছে। আজীবন পেনশন বা স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাও তারা পাবেন না নতুন নীতির অধীনে, এই বছর এই নতুন প্রকল্পে ৪৬ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে। পরবর্তী সময়ে বছরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে। তাদের মধ্যে, মাত্র ২৫ শতাংশকে ১৫ বছরের মেয়াদে আবার নিয়োগ করা হবে এবং তারা পেনশন এবং আজীবন স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা পাবেন।