ভারতের ভিতরে গত কয়েক মাস ধরে দুর্নীতি ধরতে সিবিআই বিরাট তৎপর। একের পর এক বিরোধী দলের নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা, জেলে পোরা, বাড়িতে হানা দিয়ে টাকা-নথি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে সিবিআই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু দেশের বাইরে বিরাট ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পলাতক ঋণখেলাপী হীরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় জল ঢেলে দিল ইন্টারপোল। চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস প্রত্যাহার করে নিল আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা।
মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে পিএনবি লোন জালিয়াতি মামলা রয়েছে ১৩,৫০০ কোটি টাকার। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে ধরার আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালান। ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগা-বারবুডায় রয়েছেন তিনি। তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল সিবিআই। ইন্টারপোলের মাধ্যমে চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়। কিন্তু সেই নোটিস বর্তমানে ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে উধাও। ভারতে চোকসির আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল বলেছেন, আমার মক্কেলের ভদ্রতা এবং তাঁর আইনি টিমের চেষ্টায় রেড কর্নার নোটিস প্রত্যাহার হয়েছে। সত্যিটা সামনে এল।
এই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই কোনও মন্তব্য করেন। জানা গিয়েছে, চোকসির একটি আবেদনের ভিত্তিতে রেড কর্নার নোটিস প্রত্যাহার করেছে ইন্টারপোল। ২০২১ সালে চোকসি অভিযোগ করেন, তাঁকে কিছু ভারতীয় এজেন্ট ক্যারিবিয়ান দেশ অ্যান্টিগা-বারবুডা থেকে অপহরণ করে ডমিনিকাতে নিয়ে যান।
সূত্রের খবর, ইন্টারপোলের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অ্যান্টিগা থেকে ডমিনিকায় আবেদনকারীর অপহরণের মামলা তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের জন্য হতে পারে। আর সেখানে স্বচ্ছ ট্রায়াল না-ও হতে পারে বলে ঝুঁকি রয়েছে। চোকসি ২০১৮ সালে ভারত ছেড়ে পালান। তার কয়েকদিন পরেই সিবিআই তাঁর এবং ভাগ্নে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে মামলা করে। চোকসির কাছে অ্যান্টিগা-বারবুডার নাগরিকত্ব রয়েছে।
চোকসির পরিবারের দাবি, ২০২১ সালের ২৩ মে বাবারা জারাবিক নামে এক সুন্দরী হাঙ্গেরির মহিলাকে কাজে লাগিয়ে গুরমিত সিং এবং গুরজিৎ ভান্ডাল নামে দুই যুবক প্রমোদতরীতে করে চোকসিকে ডমিনিকায় অপহরণ করে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে চোকসিকে হুমকি দেওয়া হয় এবং ভারতে প্রত্যর্পণের জন্য কনসেন্ট লেটারে সই করতে চাপ দেওয়া হয়। এমনতিই ডমিনিকায় অবৈধ প্রবেশের জন্য চোকসিকে গ্রেফতার করা হয়। তার পর প্রাইভেট জেটে করে কিছু ভারতীয় আধিকারিক তখন সেই দেশে আসেন।
কিন্তু ভাগ্য সহায় হয় চোকসির। ২০২২ সালে ডমিনিকান আদালতে চোকসির বিরুদ্ধে চার্জ খারিজ হয় এবং অ্যান্টিগায় ফিরতে পারেন তিনি।