ঝড়ের গতিতে ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের নয়া প্রজাতি। তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ুর পর শিরোনামে এবার মহারাষ্ট্র। ফের ওমিক্রনের নয়া প্রজাতিতে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। একসঙ্গে ৭ জনের আক্রান্তের খবরে কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের। জানা গিয়েছে আক্রান্ত সকলেই ওমিক্রনের BA.4 এবং BA.5 ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
এর আগে তেলেঙ্গানায় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে এবার মিলেছে ওমিক্রনের নয়া প্রজাতি BA.5 । টিকার দুটি ডোজ এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। সেই সঙ্গে জানা গিয়েছে দেশের বাইরে গত দু বছরের বেশি সময় পা’ই রাখেননি তিনি। তবে কীভাবে আক্রান্ত হলেন ওই ব্যক্তি? চিন্তায় ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। INSACOG সূত্রে জানানো হয়েছে ওই ব্যক্তির জিনোম সিকোয়েন্সে ধরা পড়েছে BA.5 ভ্যারিয়েন্ট।
পাশাপাশি তামিলনাড়ুর এক ব্যক্তির দেখে মিলেছে ওমিক্রনের BA.4 ভ্যারিয়েন্ট। ১৯ বছরের ওই মহিলার শরীরেও মিলেছে করোনার নতুন প্রজাতির সন্ধান। জানা গিয়েছে তিনিও কোভিড টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন। এর আগে এই ভ্যারিয়েন্টে দু’জনের আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। একজন হায়দ্রাবাদের এবং অন্যজন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। ভাইরাসের এই নয়া প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ার খবরে বাড়ছে উদ্বেগ।
সূত্র মারফৎ পাওয়া খবর অনুসারে জানা গিয়েছে চেন্নাইয়ে সাব-ভ্যারিয়্যান্ট BA.4এ আক্রান্ত হয়েছেন এক যুবতী। এদিকে এক সঙ্গে সাতজনের নয়া স্ট্রেনে আক্রান্তের খবর সামনে আসতেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
চতুর্থ ঢেউ প্রসঙ্গে IIT কানপুরের গবেষকরা দাবি করেছিলেন, চলতি বছরের জুন মাসের ২২ তারিখ থেকেই দেশে করোনার নতুন ঢেউ শুরু হতে পারে। এই ঢেউয়ের ভয়াবহতা চলবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। IIT কানপুরের বিশেষজ্ঞরা আরও দাবি করেছিলেন, চতুর্থ ঢেউয়ের ক্ষেত্রে সংক্রমণ শিখর ছুঁতে পারে ১৫ থেকে ৩১ অগাস্টের মধ্যে। এরপরে নিম্নমুখী হবে কোভিড গ্রাফ।ইউরোপীয় সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ওমিক্রনের দুই নতুন প্রজাতি BA.4 এবং BA.5 কে ‘উদ্বেগের নয়া রূপ’ হিসাবে ঘোষণা করেছে। এই দুই ভ্যারিয়েন্টকেই দক্ষিণ আফ্রিকায় কোভিডের পঞ্চম ঢেউয়ের অন্যতম কারণ হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে করোনার তৃতীয় ঢেউ কালীন ওমিক্রনের BA.1 এবং BA.2 ভ্যারিয়েন্টের দাপট দেখা গিয়েছিল।
তবে INSACOG এর তরফে এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম।
জানা গিয়েছে মহারাষ্ট্রে আক্রান্তদের মধ্যে চার জনের বয়স ৫০ এর বেশি। দু’জনের বয়স ২০-৪০ বছরের মধ্যে। একজন শিশুও আক্রান্ত হয়েছে এই সাব ভ্যারিয়েন্টে, যার বয়স ১০ বছরের নীচে। ডক্টর প্রদীপ আওয়াতে রাজ্যর নোডাল অফিসার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আক্রান্তদের মধ্যে দুজনের দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বেলজিয়াম ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে, আর তিনজন কেরালা এবং কর্ণাটকে ভ্রমণ করেছেন।সকলেই কোভিড টিকার দুটি ডোজ নিয়েছিলেন। একজন নিয়েছেন বুস্টার ডোজও। সকলেরই মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছে। আপাতত তাদের হোম আইসোলেশনেই রাখা হয়েছে”।
শনিবার পর্যন্ত, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুসারে রাজ্যে করোনা সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭৭২। রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের রিপোর্ট অনুসারে, পুনেতে ৩১২ টি সক্রিয় রোগী রয়েছেন এবং মুম্বাইতে এই সংখ্যা ১৯২৯ টি। থানেতে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা ৩১০।
Read in English