সুকৃতির জামিনের আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন অশোক ভট্টাচার্য

সুকৃতির আইনজীবী পার্থবাবু এজলাস থেকে বেরিয়ে জানান, জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। খবর পেয়েই প্রথমে দলীয় আইনজীবীকে জড়িয়ে ধরেন মেয়র অশোকবাবু। এরপরই কেঁদে ফেলেন পোড় খাওয়া এই সিপিএম নেতা।

সুকৃতির আইনজীবী পার্থবাবু এজলাস থেকে বেরিয়ে জানান, জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। খবর পেয়েই প্রথমে দলীয় আইনজীবীকে জড়িয়ে ধরেন মেয়র অশোকবাবু। এরপরই কেঁদে ফেলেন পোড় খাওয়া এই সিপিএম নেতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

জামিন পেয়েছেন সুকৃতি

‘‘জোর করে পুলিশ সুকৃতিকে আটকে রাখতে চাইছিল। কিন্তু তা হলনা। বিচার ব্যবস্থার উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থা ছিল। গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।’’ শিলিগুড়িতে মিছিল থেকে পুলিশের গায়ে কেরোসিন ছেটানোর অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এস এফ আই নেত্রী সুকৃতি আশের জামিনের পর সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
সুকৃতিকে গ্রেফতারের পর পাঁচদিনের হেপাজতে নিয়েছিল শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। কিন্তু রবিবার তিনদিনের মাথাতেই জামিন পেয়ে যান সুকৃতি আশ। এদিন তাঁর আইনজীবী পার্থ চৌধুরী জামিনের আবেদন করেন। শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম কিংশুক সাধুখাঁ বাম নেত্রীর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। পুলিশকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ১০ অক্টোবর সুকৃতিকে হাওড়ায় আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে শিলিগুড়ি নিয়ে এসে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিন সুকৃতির জামিনের জন্য আদালতে বিশেষ আবেদন জানিয়েছিলেন বামফ্রন্টের আইনজীবী পার্থ চৌধুরী ও দিবাকর রায়। জামিনের আবেদনের  বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী সুশান্ত গুহনিয়োগী। কিন্তু দীর্ঘ শুনানির পর বিচারক সুকৃতীকে অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দেন। পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ ডিসেম্বর।

Advertisment

আরও পড়ুন, আসামের তিনসুকিয়া হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজা সাত সেনাকর্মীর

ইসলামপুরে ছাত্র বিক্ষোভে দুই ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে গত ২৪ অক্টোবর শিলিগুড়িতে মিছিল ও মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর কর্মসূচি ছিল বামফ্রন্টের। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সিপিএমের দলীয় দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধ্বস্তাধস্তি হয়। সেইসময়ই শিলিগুড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসু সহ কয়েকজন পুলিশ কর্মীর গায়ে কেরোসিন ছেটানোর অভিযোগ ওঠে বাম নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় সুকৃতি সহ ১০০ জনের নামে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে পুলিশ।

Advertisment

রবিবার শুনানি শেষ হওয়ার খবর পেয়েই আদালত চত্বরে রবিবার বেলা তিনটা নাগাদ চলে এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ি বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। সকাল থেকেই আদালত চত্বরে ছিলেন মুন্সি নুরুল ইসলাম, স্নিগ্ধা হাজরা, পরিমল মিত্র সহ দলের নেতারা। বড় মেয়ে প্রকৃতিকে নিয়ে সকালে আদালতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুকৃতির মা স্বাতী আশ। ৩টা নাগাদ শুনানি শেষ হলেও, ৫ টায় রায় ঘোষণা হয়। সুকৃতির আইনজীবী পার্থবাবু এজলাস থেকে বেরিয়ে জানান, জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। খবর পেয়েই প্রথমে দলীয় আইনজীবীকে জড়িয়ে ধরেন মেয়র অশোকবাবু। এরপরই কেঁদে ফেলেন পোড় খাওয়া এই সিপিএম নেতা। নিজেকে সামলে কিছুক্ষণ বাদে অশোক বাবু বলেন, ‘‘মিথ্যে মামলায় একটা বাচ্চা মেয়েকে পুজোর সময় পুলিশ আটকে রাখবে,তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না, মানতে পারেনি গোটা রাজ্য। তাই তো রাজ্যের সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই জয় রাজ্যবাসীর’’।

সুকৃতির জন্য তিনি সুইজারল্যান্ড সফর বাতিল করেছেন বলেও জানান মেয়র। ২০ থেকে ২৮ অক্টোবর সেখানে রয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তন সক্রান্ত আলোচনা সভা। অশোক বাবু সহ ভারতের চারজন মেয়র ওই আলোচনা সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন।এদিকে, মেয়ের জামিনের পর স্বাতীদেবী বলেন, ‘এতদিন ইতিহাস কথা বলত। এখন সময় কথা বলবে। সত্যকে কখনোই চাপা দিয়ে রাখা যায় না’।যা বতীয় প্রক্রিয়ার পর মালা পরিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে সুকৃতিকে কার্যত মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হল সিপিএম এর দলীয় কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবনে।  জামিনের পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে সুকৃতীর জন্যে শুভেচ্ছা বার্তা আসতে শুরু করেছে।

সুকৃতীর কথায়, ' সত্যের জয় হল'। দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক জীবেশ সরকার বলেন, ‘গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।'

Ashok Bhattacharya Cpm