Advertisment

শাহিনবাগ: 'চার মাসের শিশু আন্দোলনে যাবে? মায়েরা কীভাবে সমর্থন করেন!'

শাহিনবাগে আন্দোলনকারী এক দম্পতির ওই সন্তানের মৃত্যু হয় ২৯ জানুয়ারি রাতে। দিল্লির তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পেরে মারা যায় শিশুটি, এমনটাই জানা গিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shaheen bagh protest

শাহিনবাগ ধরনার ফাইল ছবি

দিল্লির শাহিনবাগে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন একটি চার মাসের শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে স্বতঃপ্রবৃত্ত ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারকে সোমবার নোটিশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। দুই সরকারের কাছেই দেশের শীর্ষ আদালত জানতে চেয়েছে, কোনোরকম আন্দোলনে শিশুদের নিয়ে যাওয়ার বা অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া উচিত কিনা।

Advertisment

শাহিনবাগে আন্দোলনরত কয়েকজন মায়ের কৌঁসুলি বলেন যে রাষ্ট্রসংঘের রায় - যা সমর্থন করেছে ভারতও - অনুযায়ী, শিশুদের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। এর উত্তরে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, "চার মাসের শিশু প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল? মায়েরা কীভাবে এটা সমর্থন করেন!"

ভারতের সলিসিটর-জেনারেল তুষার মেহতাও বলেন যে এত ছোট শিশুকে প্রতিবাদস্থলে নিয়ে যাওয়া অনুচিত।

শাহিনবাগে আন্দোলনকারী এক দম্পতির ওই সন্তানের মৃত্যু হয় ২৯ জানুয়ারি রাতে। দিল্লির তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পেরে মারা যায় শিশুটি, এমনটাই জানা গিয়েছে। শিশুটির মা নাজিয়া (২৪) জানান যে তিনি প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন

এই ঘটনার পর রাষ্ট্রীয় সাহসিকতা সম্মানে ভূষিত জেন গুনরতন সদাভার্তে প্রধান বিচারপতির দফতরে চিঠি লিখে আবেদন জানান যে আদালত যেন শিশুদের অধিকার বজায় রাখতে হস্তক্ষেপ করে, এবং বলেন যে তাদের প্রতিবাদ সভায় নিয়ে যাওয়া "নিষ্ঠুরতার সামিল"। সদাভার্তের আরও বক্তব্য, শাহিনবাগে আন্দোলনকারীদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছে একাধিক সদ্যোজাত এবং শিশু, যাদের প্রতিকূল আবহাওয়ায় থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তাদের অধিকার লঙ্ঘন করছে।

আরও পড়ুন: ‘সিএএ মানব না, গোটা দেশ শাহিনবাগ হবে’, মোদী-শাহকে হুঁশিয়ারি প্রাক্তন সাংসদের

মৃত শিশুর মা নাজিয়ার উকিলদের, এবং সাংবাদিক জন দয়ালের কিছু বক্তব্যেও অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। তাঁদের বক্তব্য ছিল, শাহিনবাগে আন্দোলনে যেসব শিশু হাজির ছিল বা আছে, তাদের স্কুলে 'পাকিস্তানি' বা 'অ্যান্টি-ন্যাশনাল' বলা হচ্ছে। এর উত্তরে আদালত বলে, "আমরা চাই না এই মঞ্চ ব্যবহার করে আরও সমস্যার সৃষ্টি হোক...আমরা এখানে সিএএ বা এনআরসি'র বিচার করছি না। স্কুলে 'পাকিস্তানি' বলে কাউকে কটূক্তি করার বিচার করছি না। আমরা কোনও কণ্ঠ রোধ করছি না। এটি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা গঠিত একটি স্বতঃপ্রবৃত্ত মামলার প্রক্রিয়া।"

এর আগে শাহিনবাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাস্তা অবরোধ করে রাখা যায় না, এই পর্যবেক্ষণ করে সুপ্রিম কোর্ট। এ মামলায় আদালতের তরফে জানানো হয়, জনগণের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অন্যের অসুবিধা যেন না হয়। এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকার, দিল্লি সরকার ও পুলিশকে নোটিস দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি।

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে সিএএ ও প্রস্তাবিত এনআরসি-এর প্রতিবাদে দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান আন্দোলন চালাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা।

Advertisment