সিএও প্রতিবাদে শাহিনবাগে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। তারই মাঝে শনিবার ঘটে যায় ভয়ঙ্কর ঘটনা। বিক্ষোভস্থলের সামনে চলে গুলি। বন্দুকবাজ কপিল গুজ্জর বলে নিজেকে দাবি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, আটক করার সময় ‘জয়শ্রী রাম’ ধ্বনি দিচ্ছে ওই ব্যক্তি। এরপর থেকেই মনে করা হচ্ছে চরম হিন্দুত্ববাদী ভাবধারার বিশ্বাস থেকেই গুলি চালিয়েছে কপিল। কিন্তু, কপিলকে চরমপন্থী বলতে দ্বধাগ্রস্ত তার পরিবার থেকে পাড়া-প্রতিবেশী-বন্ধুবান্ধবরা। এর আগে তার সঙ্গে কথা বলে বা অন্য কোনও আচরণেও হিন্দুত্ববাদের প্রতি কপিলের এই গভীর আনুগত্য ধরা পড়েনি বলে দাবি তাদের।
শনিবার শাহিনবাগ আন্দোলনের বাইরে গুলি।
পূর্ব দিল্লির ডাল্লুপুরায় বাড়ি শাহিনবাগ গুলিকাণ্ডের অভিযুক্ত কপিল গুজ্জরের। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে পারিবারিক দুগ্ধ ব্যবসাতেই মনোনিবেশ করেছিল সে। বাড়িতে স্ত্রী, তিন বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে তার। এচাড়া আছেন বাব-মা সহ অন্যান্যরা। শনিবার বিকেলের পর থেকে কপিলের নামে নানা কথা। চেনা ছেলেটাকে কেমন যেন অচেনা ঠেকছে তারপর থেকেই। সবকিছি অবিশ্বাস্য ঠেকছে কপিলের চেনা মানুষগুলোর কাছে। তাদের একটাই প্রশ্ন, 'কেন এমন করল ও'।
গুলিকাণ্ডে হতবাক গুজ্জর পরিবারের আত্মীয় চৌধুরী কল্যাণ সিং। কপিলের চরম ডানপন্থার প্রতি অনুরাগের বিষয়টি আগে কোনওদিন প্রকাশ পায়নি বলে দাবি করেন তিনি। চৌধুরী কল্যাণ সিংয়ের কথায়, 'আর পাঁচ জনের মতই হিন্দুত্বের প্রতি ওর বিশ্বাস রয়েছে। গ্রামে সবাই একসঙ্গে সম্প্রীতি বজায় রেখেই বসবাস করে। শাহিনবাগের আন্দোলনে প্রচুর বিভ্রান্তি রয়েছে কিন্তু অনেক সময়ই আমাদের মাথায় যা চলে তা বাস্তবে করা যায় না। করার কথা ভাবতেও পারি না। কোনও দিনই ওর কোনও সমস্যা ছিল না। সবসময় চুপচাপই থাকতো।'
আরও পড়ুন: ‘দেশে শুধু হিন্দুদের কথাই চলবে’, শাহিনবাগে গুলি চালিয়ে মন্তব্য বন্দুকবাজের
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কপিলের বাবা বিএসপি-র হয়ে ২০০৭, ২০১২ সালে দিল্লি নগর নিগম ভোটে লড়লেও পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে বিধানসভা ভোটেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। তবে জয়ের মুখ দেখেননি। কপিলদের পরিচিত সূর্যবংশ গুজ্জর বলেন, 'কপিলের রাজনীতির কোনও যোগ ছিল না। আমরা তো মনে করতে পারছি না যে ও শনিবার ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।' ঘটনার ভাইরাল ভিডিও দেখে সবাই শনিবারের বিষয়টি জানতে পেরেছে। তাহলে কী ইন্টারনেট থেকেই কপিলের মনে চরমপন্থা দানা বাঁধে? প্রতিবেশীদের কথায়, অনলাইনেও কপিলকে বেশি দেখা যেত না। হোয়াটঅ্য়াপ নম্বর বদল করায় গত কয়েকদিন ধরে বন্ধুদের সঙ্গেও কপিলের যোগাযোগ ছিল না বলে জানা যায়।
শনিবার সকালেও ব্যবসায় বেড়িয়েছিল বাড়ির ছেলেটি। দুপুরে বাড়িও ফেরে। তাকে ক্রিকেট খেলতেও দেখা যায়। বিকেলের পর অবশ্য আর খোঁজ মেলেনি কপিলের। তারপরই ছড়িয়ে পড়ে শাহিনবাগের ভিডিও। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘জয়শ্রী রাম’।
Read the full story in English