সিএএ প্রতিবাদের উত্তাপ দেশজুড়ে। বিজেপির নিশানায় শাহিনবাগ। তারই মধ্যে হয়ে গিয়েছে দিল্লি ভোট। শাহিনবাগ কি পদ্ম শিবিরের কাছে অস্বস্তি? নাকি এই আন্দোলনকে পুঁজি করেই ভোট ব্যাঙ্ক গোছানোর কাজ করতে তৎপর গেরুয়া শিবির? এইসব উত্তর নিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মুখোমুখি বিজেপি মুখপাত্র শাহনাওয়াজ হুসেন।
প্রশ্ন: শাহিনবাগ কি দিল্লি ভোটে বিজেপিকে সাহায্য করবে?
উত্তর: যাঁরা এই আন্দোলনের সংগঠক, যাঁরা আশা করেছেন এই আন্দোলন থেকে ফায়দা তোলার, এই প্রশ্ন তাঁদের করা উচিত। এই প্রতিবাদ আন্দোলনের সঙ্গে আমার বা আমার দলের কোনও যোগ নেই। প্রথমে লোকদের সেখানে বসার ব্যবস্থা করে, পরে তাদের সংগঠিত করেন - তারপরে পর্দার আড়ালেই থেকে যান তাঁরা। এটাই করেছে আপ ও কংগ্রেস। স্থানীয় ইস্যুকে জাতীও ও আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়া হলো। ওখলা আসনে জয় নিশ্চিৎ করতে এই কাজ করেছেন আসিফ খান ও আমানাতুল্লা খান। আমাদের ওইসব প্রতিবাদীদের কিছু বলার নেই। অমিত শাহ সিএএ নিয়ে পি চিদাম্বরম, কপিল সিবালদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
প্রশ্ন: দিল্লি ভোটের প্রচারে বিজেপি নেতারা যেসব কথা বলেছেন সেই সমন্ধে আপনার কী মতামত?
উত্তর: ভারতীয় মুসলমানদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের কথা মনে করতে চাইব। বেঙ্গালুরু ও লখনউতে স্বারষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ভারত যতটা তাঁর ততটাই মুসলমানদেরও। এইসব নিয়ে বেশি আলোচনা হয় না। আর যদি বলেন অনুরাগ ঠাকুরের কথা, তবে বলব, আমি শুধু শুনেছি মন্ত্রী বলছেন 'দেশের গদ্দারদের' - উনি কিন্তু 'গোলি মেরে দাও' বলেন নি।
প্রশ্ন: এর আগে বিজেপি প্রার্থী কপিল মিশ্র-র তোলা স্লোগান সম্পর্কে কী বলবেন?
উত্তর: আমি বিজেপির ১০ জন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির সদস্যের মধ্যে একজন। আমি তাঁদের সঙ্গে দিনে বেশ কয়েক ঘন্টা করে কাটাই। দলের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বিজেপি প্রায় ১৪ কোটির সদস্য বিশিষ্ট একটি দল। এখানে অনন্তকুমার হেগড়ে (কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ) যা বলেছিলেন, তার নিন্দা করা হয়েছে। মহাত্মার বিরুদ্ধে কোনও বিরূপ কথা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন: এনপিআর-এর জন্য কেন সরকার বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ ও জন্মস্থান চাইছে?
উত্তর: এনপিআর হলো তথ্য সংগ্রহ করার একটি মাধ্যম, যেমন কে দরিদ্র, কে অসুস্থ। এগুলি সরকার কর্তৃক তদারকি করা যায় না। কংগ্রেস যখন এনপিআর এনেছিল, তখন এটি ধর্মনিরপেক্ষ ছিল, এবং যখন আমরা এটি প্রবর্তন করি তখন তা সাম্প্রদায়িক! অমিত শাহজী আগেই বলেছেন যে, এই তথ্য দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক। তবে, পাসপোর্ট তৈরির সময় যখন এইসব তথ্য প্রয়োজন হয় তখন কারোর কোনও সমস্যা থাকে না।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন শাহিনবাগ আন্দোলনের পিছনে আপ ও কংগ্রেস নেতারা রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এর কোনও প্রমাণ রয়েছে? যদি থাকে তবে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?
উত্তর: এইসব আন্দোলনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? ওরা তো শুধু গুজব রটায়, ভয় দেখায় ও আটক কেন্দ্রের ছবি তুলে ধরে। আন্দোলন সফল করতে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। ওখানে মোদীজী ও অমিত শাহজীকে খুন করার কথা বলা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। সিএএ-র জন্য সত্যিই যদি কোনও মুসলমান বিপদে পড়ে, তাহলে আমি সেখানে যাব।
প্রশ্ন: কিন্তু যারা গুজব রটাচ্ছে তাদেরও তো চিহ্নিত করা প্রয়োজন। কর্ণাটকে বিজেপি সরকার তো প্রাইমারি স্কুলে সিএএ-বিরোধী নাটক করার অপরাধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
উত্তর: কী চলছে, সবাই সব দেখছে। কানহাইয়া কুমার দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে ভয় দেখানোর কাজ করে চলেছেন। আসাদুদ্দিন ওয়াইসি একই কাজে দক্ষ। তিনি বুঝেছেন, মুসলমানদের একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে এই সুযোগে দলের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। সবাই স্বপ্ন দেখছেন। সবাই নিজেকে মুসলমানদের নেতা মনে করছেন। সত্যের প্রতি দৃঢ় থাকায় স্বাধীনতার সময়ও অবুল কালাম আজাদকে সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল। আজও একই পরিস্থিতি। মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে এই নেতিবাচক রাজনীতির মুখোশ খোলার চেষ্টা করছি। কেজরিওয়াল বা রাহুল গান্ধীর দাবি অনুযায়ী এই আন্দোলনের পিছনে সত্যতা থাকলে তাঁরা কেন সেখানে যাচ্ছেন না? মণিশঙ্কর আইয়ার ও শশী থারুরও সেখানে যেতে পারেন। যাাঁরা নিজেদের নগর নকশাল বলেন তাঁরাও একই কাজ করতে পারেন।
সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি ইংরেজিতে পড়তে ক্লিক করুন এখানে