শনি মানে অনেকেই জানেন পাপগ্রহ। কিন্তু, ভক্তদের অনেকের কাছে তিনি আবার শুভফলদাতা। যিনি কর্মের শুভ ফল দেন। মনস্কামনা পূরণ করেন। শনিভক্তদের দাবি, ভিনরাজ্যে এমন মন্দির আছে, যেখানে মনস্কামনা পূরণের জন্য ছুটে যান দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্ত। শুধু ভিনরাজ্যেই না। এই রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গেও কিন্তু, এমন শনিমন্দির আছে, যেখানে তিনি পাপগ্রহ নন। বরং, শনি হলেন বড়ঠাকুর। যিনি ভক্তদের ডাক শোনেন। মনস্কামনা পূরণ করেন।
দূরের কোনও জেলা নয়। খাস কলকাতার বুকে রয়েছে এমন শনি মন্দির। যেখানে শনিদেব তাঁর ভক্তদের মনোকামনা পূরণ করেন। আর, তাই এই মন্দিরে সারাবছর ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। এমনই এক জাগ্রত মন্দির হল শ্রী শ্রী শনি ও কালিমন্দির। যার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পণ্ডিত সুধীরচন্দ্র গোস্বামী। ১৩২২ বঙ্গাব্দে এই মন্দির প্রতিষ্ঠত হয়।
এই মন্দিরের ঠিকানা ৩২/৫, বিডন স্ট্রিট, কলকাতা-৬। বর্তমান সেবাইতও গোস্বামী পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম। এই মন্দিরে প্রার্থনা করা বহু ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ হয়েছে। সেই কারণে দেবতার মূর্তিকে সোনা, রুপোর অলঙ্কারের মত বিভিন্ন ধাতু দান করেছেন ভক্তরা। সেই অলঙ্কারের মাধ্যমে বোঝা যায় ঠিক কতজন ভক্তের মনস্কামনা পূরণ হয়েছে।
আরও পড়ুন- রোগ সারাতে ছুটে আসেন অসংখ্য ভক্ত, প্রতিদিনই ভিড় জমে যায় মন্দিরে
শুধু এই মন্দিরই না। খাস কলকাতার বুকে ১৭/২, বিডন স্ট্রিটের অন্য একটি শনি মন্দিরও অত্যন্ত জাগ্রত বলেই মনে করেন ভক্তরা। সেই মন্দিরেও অন্যান্য দিনের মত প্রতি শনি এবং মঙ্গলবারে ভালো ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এই মন্দিরের দেওয়ালে পাথরের ফলকে লেখা আছে শ্রী শ্রী কালীমাতার মন্দির, আদি শনির মন্দির। এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা তান্ত্রিক অখিলকৃষ্ণ চক্রবর্তী।
মন্দিরটি স্থাপিত হয়েছে ১৩৪১ সালে। ইংরেজির হিসেবে ১৯৩৪ সালে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই মন্দিরে নিয়মিত পুজোপাঠ চলছে। চক্রবর্তী বংশের তৃতীয় প্রজন্ম এখন এই মন্দিরের পুজোপাঠের দায়িত্বে। এখানে অবশ্য শনিদেবের মূর্তির সঙ্গে অন্যান্য মন্দিরের শনিদেবের মূর্তির পার্থক্য আছে। এই মন্দিরের স্বপ্নাদিষ্ট শনিদেবের মূর্তি দেখলে মনে হবে, তিনি শ্রীকৃষ্ণের কথা ভাবছেন। তাঁর কপালে লাগানো রয়েছে বৈষ্ণবদের মত তিলক। শরীরে কোনও অলঙ্কার নেই। মাথা শ্রীচৈতন্য পার্ষদদের মতই মুণ্ডিত।