নাগরিক অধিকারকর্মী ইরম শর্মিলা চানু শনিবার মণিপুরের মহিলাদের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে জাতিগত পরিচয় নির্বিশেষে সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত রাজ্যে তাঁরা শান্তি ফেরানোর জন্য সমবেতভাবে কাজ করেন। এই আহ্বানের পাশাপাশি, শর্মিলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে 'সমস্যা বুঝতে' এবং 'সেগুলোকে সমাধান করতে' মণিপুর সফরের অনুরোধও করেছেন।
'আয়রন লেডি' নামেও পরিচিত ইরম শর্মিলা একটি টেলিফোনিক সাক্ষাত্কারে পিটিআইকে বলেছেন, 'মণিপুর জ্বলছে এবং আমাদের জনগণের দুর্ভোগ দেখে আমি গভীরভাবে ব্যথিত। আমি সকলকে, (মেইতিস এবং আদিবাসীদের) একত্রিত হয়ে হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। নারীদের অবশ্যই 'মায়ের প্রকৃতি' অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁদের শক্তি ব্যবহার করতে হবে।'
ইরম এমন এক নাগরিক অধিকারকর্মী, যিনি ১৬ বছর ধরে অনশনে ছিলেন। সেই সময় তাঁকে জোর করে খাবারের টিউব দিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল। তিনি রাজ্যে শান্তির জন্য কাজ করা এক মহিলা আন্দোলনের মুখ ছিলেন। তিনি আন্দোলনের মাধ্যমে মণিপুর থেকে সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিলেন। সশস্ত্র বাহিনীর এই বিশেষ ক্ষমতা আইন নিরাপত্তা বাহিনীকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করা এবং ম্যাজিস্ট্রিয়াল তদারকি ছাড়াই গুলি করার ক্ষমতা দিয়েছিল।
এর মধ্যেই গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গিয়েছে, কুকি মহিলারা চুরাচাঁদপুর শহরে একটি মানববন্ধন তৈরি করে মেইতেই সম্প্রদায়ের লোকদেরকে দাঙ্গাবাজ জনতার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আর, তাঁদের সেনাবাহিনীর গাড়িতে চড়ে পালাতে সাহায্য করেছেন। পাশাপাশি, ইম্ফল শহরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মেইতেই মহিলারা উপজাতীয় ছাত্রদের সাহায্য করেছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন- কেন দিনের পর দিন মণিপুরে খুনখারাপি লেগেই থাকে, কী এর ইতিহাস?
সেকথা তুলে ধরে শর্মিলা জানিয়েছেন যে মণিপুর সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও কুকি এবং নাগা-সহ উপজাতিদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গার সাক্ষী। সেখানে সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা বাড়ালেই তা পরিস্থিতিকে সাহায্য করবে না। তারচেয়ে শর্মিলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আর দেশের প্রধান বিচারপতিকে মণিপুরের সমস্যাগুলোকে বোঝা, তার মূল কারণ খতিয়ে দেখা এবং তারপর তার সমাধান করার জন্য মণিপুর সফরের আবেদন করেছেন।