ইন্দ্রানী মুখার্জী। ২০১৫ সালে তাঁরই কন্যা শিনা বোরার হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত হওয়ার পর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই নাম। এহেন ইন্দ্রাণীর পলিগ্রাফ অর্থাৎ লাই ডিটেক্টর পরীক্ষার অনুরোধ সোমবার প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে সিবিআই। ইন্দ্রানীর আবেদনের জবাবে সিবিআই আবেদন সরাসরি নাকচ করার পাশাপাশি সাফ জানায়, "তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে লাই ডিটেক্টর পরীক্ষার জন্য ইন্দ্রানীর সম্মতি চাওয়া হয়েছিল এবং সেসময় তাতে তিনি রাজি হননি।"
সিবিআই আরও জানিয়েছে, এই মূহুর্তে তদন্ত যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে লাই ডিটেক্টর টেস্টে কোনোরকম উপকার হবে না, বা কোনো কিছু প্রমাণ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে না। চলতি বছরের গত মাসে ইন্দ্রানী "ন্যায় বিচারের স্বার্থে" পলিগ্রাফ পরীক্ষা দিতে রাজি হয়েছিলেন।
২০১৫ সালে পলিগ্রাফ পরীক্ষায় তাঁর অসম্মতির কথা উল্লেখ করে ইন্দ্রানী হাতে লিখে সিবিআই-কে জানিয়েছিলেন, সেসময় প্রচণ্ড চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাই পলিগ্রাফ পরীক্ষাতে মত ছিল না তাঁর। বর্তমানে তিনি অনেকটাই মানসিকভাবে স্থিতিশীল। তাই এই সময় লাই ডিটেক্টর পরীক্ষাতে বসতে রাজি তিনি।
আরও পড়ুন: রাজীব কুমার সম্পর্কিত নথি তলব দিল্লিতে, চার্জশিট পেশে কোমর বাঁধছে সিবিআই
২৪ এপ্রিল, ২০১২ শিনাকে ফোন করে মুম্বইয়ের ন্যাশনাল কলেজের সামনে আসতে বলেন ইন্দ্রাণী। সেখানে সৎ ভাই রাহুল শিনাকে ছেড়ে দিয়ে যাওয়ার পর তাকে গাড়িতে তুলে নেন ইন্দ্রাণী। গাড়িতে সেই সময় ছিলেন ইন্দ্রাণীর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্না। এরপরই সঞ্জীব ও গাড়ির চালক শ্যামভর রাইয়ের সাহায্যে শিনাকে গলা টিপে খুন করেন ইন্দ্রাণী। প্রায় দু'ঘণ্টা শিনার দেহ সমেত গাড়িতে ঘোরার পর রায়গড়ের পেন তালুকে এক জঙ্গলে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাকে। ২০১৫ সালের আগস্টে ইন্দ্রানী শ্যামভরকে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করার পর প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা।
অনুমান, ইন্দ্রাণীর প্রথম স্বামী, ত্রিপুরার এক চা বাগানের মালিক সিদ্ধার্থ দাসের মেয়ে শিনা। গৌহাটির ভাঙাগড়ে ইন্দ্রাণীর বাবা-মায়ের কাছেই বড় হয়েছিল শিনা। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জোরালো হয়েছিল ইন্দ্রাণীর প্রথম বিয়ের আগেই শিনার জন্মের অনুমান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কলকাতার সঞ্জীব খান্নাকে বিয়ে করেন ইন্দ্রাণী। সঞ্জীবের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০০২ সালে স্টার টিভি নেটওয়ার্কের সিইও পিটার মুখার্জির সঙ্গে বিয়ে হয় ইন্দ্রাণীর। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইন্দ্রাণী জানিয়েছিলেন, কলেজে পর্বের গোড়ার দিকেই পিটারের প্রথম পক্ষের ছেলে রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শিনা।
২০১৫ সালের নভেম্বরে পিটারের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করে সিবিআই। ইন্দ্রানী বর্তমানে মুম্বইয়ের বাইকুলা মহিলা সংশোধনাগারে রয়েছেন, এবং পিটারকে আর্থার রোডের উচ্চ নিরাপত্তা ব্যারাকে রাখা হয়েছে।
Read the full story in English