করোনা কালে প্রায় দু বছর ধরে বন্ধ ছিল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্লাসরুম থেকে পরীক্ষা পুরো ব্যবস্থাটাই ছিল অনলাইনে। এদিকে করোনা গ্রাফ কিছুটা নিন্মমুখী হতেই, বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে ক্লাস। এতদিন পর্যন্ত লাইব্রেরি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আংশিকভাবে চালু থাকলেও পূর্ণ সময়ের জন্য ক্লাসের ব্যবস্থা দু বছরে এই প্রথম।
কেমন ছিল দু বছর পরের সেই প্রথম দিন? রীতিমত উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একাধিক কলেজে এদিন শিক্ষার্থীদের কলেজে স্বাগত জানাতে একাধিক জমকালো ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিশেষকরে যারা নতুন তাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে কলেজে স্বাগত জানানো হয়েছে। এমন আয়োজনে স্বভাবতই অভিভূত পড়ুয়ারা। সঙ্গে ছিল কোভিড সচেতনতার একাধিক প্রচার। মিরান্ডা হাউস এবং শ্রী রাম কলেজ অফ কমার্সে, বিশাল হোর্ডিং টানিয়ে কোভিড প্রোটোকলগুলি সম্পর্কে বলা ছিল সেই সঙ্গে ছাত্র ছাত্রীদের সচেতন করার জন্য ছিল একাধিক আয়োজন,।
কলেজের গেটে প্রবেশের মুখে ছিল থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা। সঙ্গে অবশ্যই স্যানিটাইজার স্প্রে। ছাত্রদের স্বাগত জানাতে তার ক্যাম্পাসকে লাল এবং সাদা বেলুনে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। প্রথম বর্ষের সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারাও এদিন কলেজে প্রথমবারের জন্য এল। মিরান্ডা হাউসের প্রথম বর্ষের ছাত্রী গীতা জানান, 'এতদিন পরে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। আজ আমার কলেজের প্রথম দিন। খুব খুশির দিন আজ আমার জন্য। আমি কেবল সামনের পরীক্ষাগুলির জন্য সামান্য চিন্তিত। বাকী সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা'।
বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্ধি জোশি এবং প্রার্থনা মেহরোত্রাকে কলেজের গেট আলিঙ্গন করে অনেকক্ষণ একভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের কথায়, 'অফলাইনের ক্লাসে যোগ দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আজকের দিনটার জন্য গত ২ বছর অপেক্ষা করেছি। আজ আমাদের কাছে একটা স্বপ্নের দিন'। অবিনাশ বনসাল এবং নীতীশ শর্মা, আর্যভট্ট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ক্লাসে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সকালে মিরাট থেকে দিল্লি এসেছে। তাদের কথায়, 'এখন এখানে একটা থাকার জায়গার সন্ধান করছি। কিন্তু সব কটি বাজেটের বাইরে, যতদিন পর্যন্ত তা থাকার জায়গা পাচ্ছি ততদিন আমাদের যাতায়াত করতে হবে'। শ্রী রাম কলেজ অফ কমার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পীযূষ কৌশল, এর আগে কলেজের একাধিক নাটক সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার কথায়, 'এতদিন থিয়েটার ড্রামা সব ক্লাস অনলাইনে হয়েছে। এবার থেকে আবার সেই আগের মত অফলাইন।ব্যাপারটা অনুভব করেই ভাল লাগছে'।
এদিন বিভিন্ন কলেজেই ছাত্র ছাত্রীদের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আড্ডা গল্পে বিভোর থাকতে দেখা গিয়েছে। আর পড়াশুনা পীযূষের সাফ জবাব, আজ কোন পড়াশুনা নয়। সারাটা দিন আজ শুধুই উপভোগ করার! কলেজ চালু হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন পেয়িংগেস্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। তেমনই একজন প্রশান্ত পানওয়ার, তিনি বলেন, প্রায় দু বছর কলেজ বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসাও মার খেয়েছে। আজ কলেজ খুলেছে ভালো লাগছে। আশা করছি আবার আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
Read full story in English