কোনও ইচ্ছা-অনিচ্ছার ব্যাপার না। নবরাত্রিতে দক্ষিণ দিল্লিতে মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। সোমবার এমনই নির্দেশ দিলেন দক্ষিণ দিল্লির মেয়র। ২ এপ্রিল নবরাত্রি শুরু হয়েছে। চলবে ১১ এপ্রিল অবধি। দক্ষিণ দিল্লি পুরসভার নির্দেশমতো মঙ্গলবার থেকেই মাংসের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হবে। পুরকর্মীরা আগে বাজার কমিটিকে নির্দেশ জানিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, তাতেও যেন কর্তব্য শেষ হয়নি! সরাসরি দোকানগুলোয় গিয়ে এই নতুন হুকুমের কথা বলে এসেছেন। যাতে ভুল করে কেউ আবার নবরাত্রির দিনগুলোয় মাংসের দোকান খুলে না-বসেন।
দক্ষিণ দিল্লি পুরসভার কমিশনারকে সোমবার আবার এনিয়ে আবেগপূর্ণ চিঠি দিয়েছেন মেয়র মুকেশ সুরিয়ান। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'আমি এই ব্যাপারে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই যে দেশের সর্বত্র নবরাত্রি উত্সব পালিত হচ্ছে। এই পুণ্যলগ্নে দুর্গাভক্তরা উপোস করেন। নিরামিষ খাবার খান। আমিষ, মদ এবং এইজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন। শহরের এলাকাও সেভাবেই বর্ণময় হয়ে উঠেছে। নবরাত্রির দিনগুলোয় ভক্তরা মন্দিরে গিয়ে দেবীর আরাধনা করেন। নিজের এবং পরিবারের জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। এমনকী, পেঁয়াজ এবং আদাও ব্যবহার করেন না। আর, মন্দিরের কাছে খোলা বাজারে মাংস বিক্রি হচ্ছে দেখলে তাঁরা অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। মাংসের দোকানের পাশ দিয়ে গেলে তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আবেগ ধাক্কা খাবে। মাংসের দোকানের দুর্গন্ধও পাবেন। তার ওপর কিছু মাংসের দোকান তো রাস্তার পাশেই বর্জ্য জমিয়ে রাখে। যা পথকুকুররা টানাটানি করে। এটা শুধু অস্বাস্থ্যকরই না, পথচারীদের কাছে দৃষ্টিকটূও। এই ধরনের ঘটনাগুলো আটকানো যায়, যদি নবরাত্রির ক'দিন মাংসের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয় তো! পাশাপাশি, নবরাত্রির দিনগুলোয় মন্দিরের আশপাশ স্বচ্ছ রাখাও প্রয়োজন।'
এসব আবেগপূর্ণ বক্তব্যের পর দক্ষিণ দিল্লিতে মাংসের দোকানগুলো বন্ধ রাখার কথা মেয়র চিঠিতে জানিয়ে দিয়েছেন। মেয়রের নির্দেশ পাওয়ার পর পুরকর্মীরা তা বাস্তবায়িত করার দিকে ঝুঁকলেও এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি। দক্ষিণ দিল্লি পুরসভার কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতীও তাঁকে লেখা মেয়রের চিঠি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে, সাংবাদিকরা মেয়রকে কাছে পেয়েছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যাঁরা এই নবরাত্রি পালন করছেন না, সেই সব ব্যক্তিরা কী করবেন? জবাবে মেয়র মুকেশ সুরিয়ান জানিয়েছেন, ওই সব ব্যক্তিদের উচিত বাকিদের আবেগের প্রতি সম্মান দেখানো। সেই জন্য তাঁদেরও এই নবরাত্রির দিনগুলো মাংস না-খাওয়াই উচিত। তাহলে এই কয়েকদিন কি দক্ষিণ দিল্লির বাজারে আদা, পেঁয়াজও বিক্রি করা যাবে না? সাংবাদিকদের সেই প্রশ্নের অবশ্য কোনও জবাব দেননি দক্ষিণ দিল্লির মেয়র।
Read story in English