করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে ওষুধ নিয়ে সারা বিশ্ব তোলপাড় সেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এবার সাবধানবাণী শোনাল আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের দাপটে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন মুলুক। কোভিড-১৯ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত রুখতে ভারত থেকে ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দিয়েই শুরু হয়েছে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাও। কিন্তু গোল বেঁধেছে সেখানেই। এফডিএর তরফে জানান হয়েছে ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। যার ফলে হৃদস্পন্দনজনিত সমস্যা আরও বাড়তে পারে। নিমেষেই ঘনিয়ে আসতে পারে মৃত্যু।
ইতিমধ্যেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারে রাশ টানতে কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে এমন রোগীকেই এই ওষুধ প্রয়োগ করার অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্যসংস্থাটি। পাশপাশি রোগীকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা করার পরই এই ড্রাগ ব্যবহার করতে পারবেন চিকিৎসকেরা সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এফডিএ-এর কমিশনার স্টিফেন এম হান বলেন, "আমরা বুঝতে পারছি যে স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিকল্প ব্যবস্থার সন্ধান করছেন। কিন্তু সেই চিকিৎসায় যাতে কোনও ক্রুটি না থেকে যায় এর জন্যই আমরা তাঁদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি জানিয়ে রাখছি।"
আরও পড়ুন: "দিল্লিতে করোনা আক্রান্তের দেহে প্লাজমা পরীক্ষার ফল আশাপ্রদ"
হান এও বলেন, "যে ওষুধের এখনও ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে সেই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।" প্রসঙ্গত, এই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং ক্লোরোকুইন ওষুধগুলি মূলত ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বেশ কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ম্যালেরিয়ার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে রোগীকে দেওয়া হচ্ছে ওষুধটি। এর পাশাপাশি যাঁদের আর্থারাইটিস বা গাঁটের ব্যাথা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও একই জেনেরিক নামের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট ওষুধটি দেওয়া হয়, যা এফডিআই দ্বারা স্বীকৃত।
এদিকে যেখানে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা হল কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই করোনাকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে পারে এই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ড্রাগ, এমন কথা এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত নয়। ল্যাবরেটরিগুলিতে এখন এই নিয়ে চলছে ক্লিনিকাল ট্রায়াল। তবে করোনা মোকাবিলার প্রাথমিকভাবে এই ওষুধ ব্যবহার করা হলে কিছুটা হলেও মানবদেহে ভাইরাসের দাপটকে খানিক নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এমনটা জানা গিয়েছে।
যদিও মার্কিন মুলুককে করোনামুক্ত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে এই ওষুধের ব্যবহার করেছেন সেখানে নিউইয়র্ক এবং বেশ কয়েকটি জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যায় লাগাম টানলেও এবার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভাবিয়ে তুলছে সকলকে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন