Advertisment

পুলিশের গায়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা, গ্রেফতার এসএফআই কর্মী

বিচারক অভিযুক্তের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। আগামী মঙ্গলবার ফের সুকৃতিকে আদালতে তোলা হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সুকৃতিকে হাওড়ায় তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়

শিলিগুড়িতে মিছিল থেকে পুলিশের গায়ে কেরোসিন ছেটানোর অভিযোগে হাওড়া থেকে এসএফআই-এর এক মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করল শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। ধৃতের নাম সুকৃতি আশ। তিনি শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। হাওড়া পুলিশের সহায়তায় বুধবার সকালে এক নিকটাত্মীয়ের বাড়ি থেকে সুকৃতিকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। বুধবার তাঁকে হাওড়া আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে নিয়ে এসেছে পুলিশ। ধৃতকে আদালতে পেশ করে তাকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানায় পুলিশ। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক অভিযুক্তের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। আগামী মঙ্গলবার ফের সুকৃতিকে আদালতে তোলা হবে।

Advertisment

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন শহরের প্রথম সারির বাম নেতারা। অন্যদিকে,কোনপ্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আদালত চত্বরে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।

আরও পড়ুন, শিলিগুড়িতে পুলিশের গায়ে পেট্রোল ঢালার অভিযোগ, সিপিএমের মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার

ইসলামপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে গত মাসের ২৪ তারিখ বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটি মিছিল ডাকা হয়। বিকেল ৫টা নাগাদ মিছিলটি অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাসমিচক হয়ে ফের অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে এসে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করার চেষ্টা করেন সিপিএম নেতারা। এরপর পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাদের। পুলিশ সিপিএম নেতাদের কুশপুতুল দাহ করতে বাধা দেয়। পুলিশের বাধা পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাম নেতৃত্ব। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। অভিযোগ, এমন সময় কয়েকজন নেতা শিলিগুড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসু খালপাড়া ফাঁড়ি ওসি সুবল ঘোষ এবং পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির ওসি সমীর তামাংয়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে তাদের জ্বালিতে দেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার অচিন্ত্য গুপ্তর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান নেতারা। এরপর থেকেই সিপিএম নেতাদের খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

ওই দিনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুকৃতি আশের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন এসএফআই নেত্রী। এরই মাঝে পুলিশের কাছে খবর আসে হাওড়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন সুকৃতি। সুকৃতিকে গ্রেফতার করতে মঙ্গলবার রাতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয় শিলিগুড়ি  পুলিশের একটি দল। বুধবার সকালে কলকাতা পৌছেই হাওড়া পুলিশের সহায়তায় সুকৃতিকে গ্রেফতার করে সেখানকার আদালতে তোলা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেন থেকে নামার পর এনজেপি থানায় রাখা হয় সুকৃতিকে।সেখানে এসএফআই নেতৃত্বের ভিড় বাড়তে থাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। সাড়ে বারোটা নাগাদ সুকৃতিকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক জীবেশ সরকার, দার্জিলিং জেলা সিটুর সম্পাদক সমন পাঠক সহ বাম নেতৃত্ব। ছিলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের একাধিক কাউন্সিলার। আদালতে বাম নেতাদের ভিড় বাড়তে থাকায় সেখানেও মোতায়েন করা হয় বিশাল বাহিনী।

বিচারকের কাছে ধৃতের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের জন্য় সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া। ! হেফাজতের বিরোধিতা করেন বামেদের আইনজীবী পার্থ চৌধুরী। এরপর এই বিচারক তদন্তকারী অফিসারের কাছে ১০ দিন হেফাজতের কারণ জানতে চান। তদন্তকারী অফিসার বিচারককে জানান ঘটনায় জড়িত বাকিরা সকলেই পলাতক। তাদের খোঁজের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। সরকারি আইনজীবীর কথার বিরোধিতা করে পার্থ বাবু বিচারককে বলেন এ ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউই পলাতক নন। কোনও ভাবেই সুকৃতী পুলিশকে মারতে চাইনি বলে দাবি করেন সুকৃতির আইনজীবী। প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক সুকৃতি আঁশের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এদিন আদালত চত্বরে সুকৃতি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন,"আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। কোনভাবেই আমি কোন পুলিশ কর্মীর গায়ে আগুন জালাতে বলিনি। আমি কুশপুতুল দাহ করার কথা বলেছিলাম।"

দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহবায়ক জীবেশ সরকার বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন। আমরা প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম তাই পুলিশ আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। রাজ্যজুড়ে এর প্রতিবাদ হবে।"

শিলিগুড়ি বিধায়ক মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, "পুজোর আগে বাচ্চা মেয়েটিকে শায়েস্তা করতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি। আইনের মাধ্যমেই সুকৃতি লড়বে। আমরা ওর পাশে আছি।"

Cpm police
Advertisment