ফাঁসিদেওয়ার কাছে কান্তিভিটায় ৩১ডি জাতীয় সড়কের উপর ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ উড়ালপুল। শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকাই ভেঙে পড়ে উড়ালপুলের ১০০ মিটার অংশ। ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর না থাকলেও এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ক্ষোভে গ্রামবাসী এদিন সকাল থেকেই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে ফাঁসিদেওয়ার বিডিও এবং শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক ঘটনাস্থলে পোঁছে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
ফাঁসিদেওয়ায় গত একবছর ধরে জাতীয় সড়কের উপরে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের চার লেনের কাজ চলছে। সেখানেই প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার উপরে চলছিল উড়ালপুল তৈরির কাজ। অভিযোগ, শুক্রবার রাত ৩টা২০ মিনিট নাগাদ হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে উড়ালপুলের একটি অংশ। কিন্তু রাতে বৃষ্টি থাকায় সকালে বিষয়টি নজরে আসে। স্থানীয় সুরজ সরকার সকালে প্রথম বিষয়টি দেখেন। এরপরেই এলাকায় ভিড় বাড়তে থাকে। স্থানীয়দের ভিড়ে এলাকায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফাঁসিদেওয়ার থানার পুলিশ বাহিনী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নির্মাণকারী সংস্থার ঘটনাস্থলে যান ইঞ্জিনিয়ররা। হাতের কাছে পেয়েই তাঁদের ওপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। কোনোক্রমে ইঞ্জিনিয়ররা সেখান থেকে পালিয়ে যান।
এরপরই ফাঁসিদেওয়া ওসি সঞ্জয় দাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ পৌঁছতেই রাস্তা অবরোধ শুরু করে উত্তেজিত জনতা। যার জেরে জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান শিলিগুড়ি মহকুমা শাসক সিরাজ দানেশ্বর। এদিনই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফাঁসিদেওয়া থানায় নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানান বিডিও। অন্যদিকে, চালু হওয়ার আগেই উড়ালপুল কী ভাবে ভেঙে পড়ল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংস্থার সহকারী ম্যানেজার সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,"নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কোনো প্রশ্নই নেই। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে কোনো লরি ধাক্কা মারাতেই এমনটা হয়েছে।"
যদিও প্রাথমিক তদন্তে ওই এলাকায় এই ধরনের কিছু পায়নি জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে, লরির ধাক্কাতেই যদি সেতু ভেঙে পড়ে তবে পরবর্তীতে কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। বিডিও প্রণয় কুমার মজুমদার বলেন," আমরা ফাঁসিদেওয়া থানায় একটি অভিযোগ করছি। জেলাশাসককে জানানো হয়েছে বিষয়টি।"
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন,বিষয়টি শুনেছি। রাজ্য সরকার ঘটনার খোঁজখবর করছে।"