সিঙ্ঘু সীমানায় কৃষকদের ধর্নাস্থলের কাছে পুলিশের ব্যারিকেডে ঝুলছে হাত-পা কাটা যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। যা ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকে চরম উত্তেজনা ওই অঞ্চলে। কে বা কারা এই নৃশংস কাজ করেছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। এই ঘটনায় পুলিশের নিশানায়, কৃষক ধর্না আন্দোলনের অন্যতম সহযোগী নিহাঙ্গ শিখ গোষ্ঠী। জানা গিয়েছে, ভিডিও বার্তায় নিহাঙ্গ শিখ গোষ্ঠী এই খুনের দায় স্বীকার করেছে।
ভাইরাল একটি ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যাচ্ছে, যুবকটিকে প্রথমে উল্টে যাওয়া পুলিশ ব্যারিকেডে বাঁধা হচ্ছে, পরে তার কব্জি কেটে ফেলা হয় এবং গোড়ালি, পা ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশের মতে, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে এই ঘটনার পিছনে রয়েছে নিহঙ্গ শিখ যোদ্ধা গোষ্ঠী। শিখ ধর্মগ্রন্থকে অসম্মান করেছে সন্দেহে ওই যুবককে তারা হত্যা করেছে।
নিহত বছর ৩৫-এর যুবক লখবীর সিং। তাঁর বাড়ি পাঞ্জাবের তরণ তারং জেলার চিমা-কালাং গ্রামে। গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান ও স্থানীয় ডিএসপি ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের দাবি, ঘটনার খবর এ দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ পেয়েছিল তারা। এরপরই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কুঁদলি থানার পুলিশ।
সোনিপথের পুলিশ সুপার জশহানদীপ সিং রনধাওয়া বলেন, 'রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত যুবককে সাভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের এফআইআর করা হয়েছে। ভাইরাল কয়েকটি ভিডিওথেকে জানা যাচ্ছে যে,পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কে অসম্মান করার দায়ে নিহাঙ্গ শিখ গোষ্ঠী এই কাজ করেছে। প্রাথমিক অনুমান হচ্ছে নিহঙ্গ শিখ গোষ্ঠীর লোকেরাই যুবকটিকে প্রথমে মারধর করে খুন করেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।'
ভাইরাল ভিডিওতে, ওই ব্যক্তিকে রক্তের সাগরে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, সর্বত্র রক্ত পড়ে রয়েছে। হাত দড়ি দিয়ে বাঁধা এবং তার মুখের পাশ থেকে বাম বাহু কাটা, বেশ কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।
অন্য একটি ভিডিতে এক ব্যক্তি বলছেন যে রাত ৩টের সময় গুরুদ্ধারের কাছে নিহত ব্যক্তিতে দেখা গিয়েছিল। ভিডিও বলেতে শোনা যায়, 'অজ্ঞাত পরিচয় কোনও ব্যক্তি গুরুদ্বার থেকে ধর্মগ্রন্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তখন তাঁকে স্বেচ্ছাসেবকরা ধরে ফেলে। কারা তাঁকে পাঠিয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপরই আমরা তাঁর পা ভেঙে দেওয়া ও হাত কাটা হয়। দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল যে বা যারা তাকে এই কাজ করতে পাঠিয়েছিল তারা এবার এসে দেখে যাক। আরাই ওকে হত্যা করেছি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে সে অসম্মান করেছিল। পুলিশ তাদের তদন্ত করতেই পারে।'
পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামপঞ্চেয়েত প্রধান সূত্রে খবর, নিহতের অভিভাবকরা এখন আর বেঁচে নেই। মঙ্গলবার তাঁকে শেষ গ্রামে দেখা গিয়েছিল। গ্রাম থেকে সেই শুধু সিঙ্ঘু সীমানায় এসেছিল।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন