Advertisment

দিল্লি হিংসার 'মদতদাতা' ইয়েচুরি-যোগেন্দ্র যাদব-জয়তী ঘোষরা, পুলিশের চার্জশিটে উল্লেখ

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

উপরের বাঁদিক থেকে- যোগেন্দ্র যাদব, জয়তী ঘোষ, অপূর্বানন্দ, রাহুল রায় সীতারাম ইয়েচুরি,

গত ফেব্রুযারিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মামলায় দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে এ বার উঠে এল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, স্বরাজ অভিযানের নেতা যোগেন্দ্র যাদব এবং অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষ ও অপূর্বানন্দের নাম। শনিবার দিল্লি পুলিশের তরফে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। জেএনইউ-য়ের পড়ুয়া দেবাঙ্গনা কলিতা ও মহেশ নরওয়াল, জামিয়ার ছাত্রী গুলফিসা ফাতিমার জবানবন্দির ভিত্তিতে চার্জশিটে নাম রয়েছে ইয়েচুরি, জয়তী ঘোষ, যোগেন্দ্র যাদবদের। চার্জশিটে উল্লেখ এঁরা আন্দোলনকারীদের ‘উস্কানি’ দিয়েছিলেন।

Advertisment

দিল্লি পুলিশের দাবি, জেএনইউ-য়ের ছাত্রী দেবাঙ্গনা ও ছাত্র মহেশ নারওয়াল স্বীকার করেছে যে তারা হিংসার সঙ্গে পরোক্ষে জড়িত। অধ্যাপক জয়তী ঘোষ, অপূর্বানন্দরাও যে তাদের মদত ও সাহস জুগিয়েছিল তাও নাকি স্বীকার করেছে এই পড়ুয়ারা। দিল্লির বিভিন্ন জায়গা সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে পিছন থেকে এই বিশিষ্টজনেরা সহায়তা করেছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ। পুলিশ জানিয়েছে গুলফিসা ফাতিমার বয়ানের ভিত্তিতে ইয়েচুরি ও যাদবের নাম অতিরিক্ত চার্জশিটে রয়েছে। সে স্বীকার করেছে সিএএ বিরোধী আন্দোলন পরিচালনা ও তাতে উস্কানি দিয়েছেন এই দুই রাজনীতিবিদ। তবে এই জবানবন্দির একাধিক পৃষ্ঠায় সাক্ষরে রাজি হয়নি দুই ছাত্রী।

গুলফিসার জবানবন্দি অনুযায়ী পুলিশ জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় দেশের ভবমূর্তি 'কলঙ্কিত' করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

সিএএ বিরোধী আন্দোলনে পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছে পড়ুয়ারা। এছাড়াও সিএএ বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে ভীম আর্মি প্রধান ছন্দ্রশেখর, জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খালিদ, প্রাক্তন বিধায়ক মতিন আহমেদ ও আমানাতুল্লাহ খানের।

দিল্লি পুলিশ যে চার্জশিট জমা করেছে, তাতে ‘পিঁজরা তোড়’ আন্দোলনে যুক্ত দেবাঙ্গনা কলিতা, জেএনইউ-এর ছাত্রী নাতাশা নারওয়াল ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্রী গুলফিশা ফতিমার ভূমিকার কথা রয়েছে। তিন জনের বিরুদ্ধেই কঠোর ইউএপিএ আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।

ফেব্রুযারির পূর্ব দিল্লিতে হিংসায় নিহত হন ৫৩ জন। আহত হয়েছেন ৫৮১ জন। সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র উসকানিমূলক মন্তব্য করার পরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তবে কপিলের বিরুদ্ধে পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। তাই বিরোধী দলের নেতা ও মতামত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম থাকায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দিল্লি পুলিশ মুখপাত্র অনিল মিত্তল অবশ্য জানিয়েছেন, নিয়ম মেনেই ছাত্রীদের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। নিয়ম মেনেই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। চার্জশিটে নাম থাকা মানেই কাউকে ‘অভিযুক্ত’ বলা নয়। তবে পরে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পেলে এঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ দিল্লির হিংসা মামলায় সীতারাম ইয়েচুরির নাম অতিরিক্ত চার্জশিটে উল্লেখ থাকায় দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন সিপিআইএম-য়ের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এক বিবৃতিতে সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি হিংসার তদন্তের নামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সমাজকর্মী, চিকিৎসক, অধ্যাপক, দাঙ্গায় আক্রান্ত মানুষের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করছে। এখন ওই মামলার অতিরিক্ত চার্জশিটে সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ, অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব, তথ্যচিত্র নির্মাতা রাহুল রায়ের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ বিকৃত করে, রাজনৈতিক প্রভুদের নির্দেশে মনগড়া এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে, সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনকারীদের কণ্ঠস্বর দমন করতে কেন্দ্রের সরকার তৎপর। ফ্যাসিস্তসুলভ পদক্ষেপ নিয়ে তারা গণতন্ত্রকে আক্রমণ করতে চাইছে।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

delhi
Advertisment