অবশেষে তিনি ছাড়া পেলেন। পাক্কা ছ'বছর পর আবারও নিজের বাড়িতে ফিরছেন। মুম্বইয়ের হামিদ নেহাল আনসারি। বেআইনি ভাবে পাকিস্তানে ঢোকার অভিযোগে সে দেশে কারারুদ্ধ ছিলেন। সেই কঠিন সময় পেরিয়ে অবশেষে মঙ্গলবার দেশে ফিরলেন হামিদ। সোমবারই পাক সরকারের তরফে জানানো হয়, হামিদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। তাই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
কর্তারপুর করিডোর খুলে দেওয়ার পর হামিদের মুক্তি যেন দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা আরও অনেকটা কমিয়ে দিল। হামিদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত সরকার। এ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেন, "পাকিস্তানের থেকে বিবৃতি পেয়েছি। ওরা হামিদকে ছেড়ে দিচ্ছে। খুব স্বস্তি পেলাম সকলে। বিশেষত ওঁর পরিজনদের জন্য খুব স্বস্তির খবর।" সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছিল, ওয়াঘা সীমান্ত হয়ে দেশে ফিরবেন হামিদ। সেই অনুযায়ী সবরকম বন্দোবস্ত করেছে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশন। সোমবারই দিল্লিতে পৌঁছেছেন হামিদের বাবা-মা। সেখান থেকে তাঁরা ওয়াঘা সীমান্ত যাওয়ার জন্য অমৃতসর রওনা দেবেন।
আরও পড়ুন: ‘বাধা’ পেরিয়ে অবশেষে আজ শবরীমালায় রূপান্তরকামীরা
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে আফগানিস্থান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকেন হামিদ (৩৩)। তখনই সে দেশে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। অনলাইনে এক মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় হামিদের। তাঁর সঙ্গে দেখা করতেই পাকিস্তানে যান হামিদ। ২০১৫ সালে তাঁকে তিন বছর কারাবাসের সাজা শোনায় পাক সামরিক আদালত। সে বছর ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে পেশাওয়ার সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়।
সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, গত ছ'বছরে হামিদের কনস্যুলার অ্যাকসেসে অনুমতি দেয়নি পাক সরকার। এজন্য বহুবার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও তা খারিজ হয়ে যায়। শুধুমাত্র মায়ের সঙ্গে হামিদের কথা বলার জন্য গতবছর একটি ফোন কলের অনুমতি দেয় পাক সরকার।
গত রবিবার কারাবাসের মেয়াদ শেষ হলেও তাঁর প্রয়োজনীয় নথি পেশ না হওয়ায় সেদিন দেশে ফিরতে পারেননি হামিদ। গত বৃহস্পতিবার পেশাওয়ার হাইকোর্টের নির্দেশনামায় পাক সরকারকে একমাসের মধ্যে হামিদের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফৈজল বলেছেন, "সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাই হামিদকে ছাড়া হচ্ছে। তাঁকে ভারতে ফেরানো হচ্ছে।" হামিদ ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ বলেই অবশ্য দাবি করেছেন ফৈজল।
Read the full story in English