বৃহস্পতিবার কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে চার ঘণ্টার রেল রোকোর ডাক দিয়েছিল প্রতিবাদী কৃষক সংগঠন। কেন্দ্রের আনা তিনটি কৃষি আইন বিলোপের দাবিতে এই আন্দোলন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আরপিএসএফ-র অতিরিক্ত ২০ কোম্পানি মোতায়েন করেছিল রেল। পিটিআই সূত্রে এমনটাই খবর। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত চলে এই রেল রোকো।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচি উপলক্ষে আরপিএফ-র ডিজি অরুণ কুমার বলেন, 'প্রত্যেককে শান্তি রক্ষার আবেদন করা হচ্ছে। আমরা জেলা শাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছি আর কন্ট্রোল রুম থেকে সব নজর রাখা হবে।' তিনি জানান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের জন্য পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিবাদীদের প্রতি ডিজির বার্তা, 'কোনও যাত্রীর যাতে অসুবিধা না হয় সেটা নিশ্চিত করা উচিত। আমাদের হাতে চার ঘণ্টা আছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে সেই প্রতিবাদ সম্পন্ন করা হোক।' সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা এই রেল রোকোর ডাক দিয়েছিল। এই সংগঠনই সিঙ্ঘু-সহ অন্য সীমান্তে কৃষক আন্দোলন সংঘটিত করেছে। এর আগে কৃষি আইন বিলোপের দাবিতে ২৬ জানুয়ারি ট্রাক্টর যাত্রা এবং ৬ ফেব্রুয়ারি চাক্কা জ্যামের ডাক দিয়েছিল এই সংগঠন।
এদিকে, এই রেল রোকো প্রসঙ্গে জগতার সিং বাজওয়া গাজিপুরে বলেছেন, 'রেল রোকো কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। যাত্রীদের অসুবিধা যাতে না হয়, আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখেছিলাম। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম।'
ইতিমধ্যে, দু’মাস ধরে চলা অহিংস আন্দোলন হঠাৎ করেই হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল। ২৬ জানুয়ারির ঘটনায় দাগ লেগেছে কৃষক আন্দোলনের গায়ে। জঙ্গি সংগঠন খালিস্থানীরা প্রতিবাদী কৃষকদের মদত দিচ্ছি বলে অভিযোগ করে প্রশাসন। যা উড়িয়ে দিলেও সতর্ক কৃষক নেতারা। চরমপন্থীরা কেন্দ্র বিরোধী কৃষক আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করে যাতে সরকারের হাত শকত্ করতে না পারে তার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে দূরে থাকার আবেদন করেছেন পাঞ্জাবের চাষীরা।
হোশিয়ারপুরের কৃষক লাখবীর সিং, যিনি প্রতিদিন সিঙ্ঘু সীমানায় ধর্নায় থাকেন তাঁর বক্তব্য, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বা খালিস্থানীরা যদি সত্যিই কৃষকদের মঙ্গল চান তাহলে যেন তাঁরা নিজেদের আদর্শ অনুসারে এই আন্দোলন সম্পর্কে কোনও মন্তব্য না করেন। কৃষক আন্দোলনের কালো দিক বার করতে সরকার তৎপর। ওদের রূঢ় মন্তব্যের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনকে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
কৃষি আইন বিরোধী অন্য এক প্রতিবাদী চাষী রাজেন্দ্র সিং ঠাকুরের কথায়, ‘যদি কোনও গোষ্ঠীর সদস্য নিজেদের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে থাকেন তবে তাঁদের দূরে থাকাই ভালো। এটাই কৃষকদের প্রতি তাঁদের সেরা সমর্থন বলে বিবেচিত হবে।’
ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ানের (উগরাহান) সম্পাদক সুখদেব সিং কোকরিকালান বলেছেন, ‘কৃষকদের আন্দোলনকে যেকেই গণতান্ত্রিক পথে সমর্থন করেত পারে। আনরা তার বিরোধী নই। কিন্তু, অবশ্যেই সেই সমর্থন কৃষকদের আন্দোলেনর উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনও গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য এই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে চরিতার্থ করা যাবে না।’