মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে আজ ত্রিপুরায় সমস্ত মাংসের দোকান বন্ধ। আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এএমসি) বুধবারই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পশু জবাই এবং মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল।
কর্পোরেশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, 'আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে অনুরোধ করা হচ্ছে ১৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার কর্পোরেশন এলাকায় কোনও পশু বা পাখি জবাই না করার। ওই দিন আগরতলা পৌর এলাকায় কোনও পশু বা পাখির মাংস বিক্রিও করা যাবে না।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ওয়েবকে আগরতলার মেয়র দীপক মজুমদার বলেছেন, 'এটি মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে পৌরসভার উদ্যোগ এবং এটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুধু এই যে এগুলো আগে মানা হয়নি। তবে এখন যা কিছু জানানো হচ্ছে তা মানা হচ্ছে।' তাঁর সংযোজন যে, 'পৌরসভা পশুদের অনিয়ন্ত্রিত জবাই বন্ধ করার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ২০ এপ্রিলের মধ্যে মাংস বিক্রেতাদের আবেদন করতে এবং নথিভুক্ত হতে এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে বলেছে।'
মহাবীর জয়ন্তীতে মাংস বিক্রি বন্ধ করার পৌর পদক্ষেপের প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ ছিল যে, এটি মাংস বিক্রেতাদের পছন্দের স্বাধীনতা এবং জীবিকা নির্বাহের উপর আক্রমণ।
ত্রিপুরা সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর কথায়, 'এটি অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে। আমরা মহাবীরকে সম্মান করি এবং যাঁরা তাকে শ্রদ্ধা করে তাদের কঠোর জীবনধারণকেও সম্মান করি। কিন্তু অন্যান্য সম্প্রদায়ের খাদ্যাভ্যাসের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা সরাসরি এই দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে'
ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যের দাবি, 'জৈন সম্প্রদায়ের লোকেরা চান যাতে কোনওভাবেই কোরার জীবনের ক্ষতি না হয়। জৈনরা ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত এবংবিজেপি সর্বদা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্র তাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সম্মান করার জন্যই। কারও স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।'
এই বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে, ত্রিপুরা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে পাবলিক প্লেস এবং রাস্তায় মাংসের পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল এবং আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে কসাইখানা স্থাপনের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বলেছিল। যার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, যথাযথ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবর্জনা নিষ্কাশন করা।
চলতি বছরের ২২শে ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি ইন্দ্রজিৎ মহন্তি এবং বিচারপতি এস জি চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক প্রদত্ত আদেশটি অ্যাডভোকেট অঙ্কন তিলক পলের দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেরেক্ষিতে হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই পুরসভা শহরে মাংস বিক্রি ও পশু জবাই পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করে দেয়।