টানেলে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার অভিযান। সিল্কিয়ারা টানেলে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং (অব.) সিল্কিয়ারা টানেল সাইটে পৌঁছেছেন। যেখানে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে উদ্ধার অভিযান চলছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে বড় খবর পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছে দেশ।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) কর্মীরা উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে সিল্কিয়ারা টানেলে উদ্ধার অভিযানের সময় ধ্বংসাবশেষের কারণে পাইপ ভেঙে গেলে দড়ি দিয়ে বাঁধা চাকার স্ট্রেচারের সাহায্যে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করার পরিকল্পনা করেছে। বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। এনডিআরএফ মহাপরিচালক অতুল কারওয়াল বলেছেন যে বাহিনীর কর্মীরা আটকে পরা শ্রমিকদের উদ্ধারের পুরোপুরি প্রস্তুত ।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা বিবৃতি অনুসারে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি উত্তরকাশীতে অস্থায়ী সিএম ক্যাম্প অফিসে উপস্থিত রয়েছেন। সেখান থেকে, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকাশী-যমনোত্রী সড়কে অবস্থিত সিল্কিয়ারা টানেলে ভূমিধসের কারণে টানেলের ভিতরে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করতে চলমান ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে উপস্থিত আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন।
টানেলের ভিতরে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা
এখন টানেলের ভিতরে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে যাতে টানেলের ভিতরে উদ্ধার অভিযানের সময় কী ধরনের সমস্যা হতে পারে তা আগে থেকেই মূল্যায়ন করা সম্ভব। এ সময় টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে নিরন্তর কথাবার্তা চলছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে একটানা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার অভিযান। বৃহস্পতিবার, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের উত্সাহিত করছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে পুরো দেশ তাদের সঙ্গে রয়েছে।
উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক আজই আঁধার কাটিয়ে আলোয় ফিরতে পারেন। গত তিন দিন ধরে প্রতিদিনই এই আশায় বুক বেঁধেছে দেশের আপামোর জনগণ। ধ্বংসাবশেষে ৫০ মিটার পর্যন্ত পাইপ বসানোর কাজ সম্পুর্ণ হয়েছে এবং মাত্র ১০ মিটার পাইপ বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। ২৩ নভেম্বর ভিতরে মাত্র তিন মিটার পাইপ বসানো সম্ভব হয়েছে। এখন মাত্র ১০ মিটার খনন বাকি আছে কিন্তু চ্যালেঞ্জ হল উদ্ধার অভিযান গতকাল সন্ধ্যার পর উদ্ধার অভিযান ব্যহত হয়। অগার মেশিনে ত্রুটির পরে উদ্ধারকাজ বন্ধ করতে হয়। সারারাত চলে মেশিন মেরামতের কাজ। এখন পর্যন্ত টানেলের ভিতরে ৫০ মিটার খনন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলেই দাঁড়িয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা ভাস্কর খুলবে নিজেই। তিনি বলেন, শ্রমিকরা কবে নাগাদ বেরোতে পারবে, তা সঠিকভাবে বলা ঠিক হবে না। তবে গোটা দেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব তাদের বের করে আনা সম্ভব হবে।
১০ মিটার ড্রিলিং বাকি…আজ সুসংবাদ আসবে!
আজ বিকেলের মধ্যে টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনা সম্ভব হবে বলেই আশাবাদী উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। একটি দল যখন সুড়ঙ্গে খনন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন, তখন উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য ড্রোন সেন্সর রাডার ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতে প্রথমবারের মতো টানেলের ভেতরে ড্রোন সেন্সর রাডার ব্যবহার করা হচ্ছে। বেঙ্গালুরু থেকে বিশেষজ্ঞদের একটি দল এই ড্রোন নিয়ে সুড়ঙ্গের ভিতরে গিয়েছে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক টানেল দুর্ঘটনার বড় আপডেট
১২ নভেম্বর- টানেলে আটকা পড়া ৪১ জন শ্রমিক ।
১৩ নভেম্বর - ধ্বংসাবশেষ বন্ধ করার জন্য কংক্রিট স্থাপন করা হয়েছে।
১৪ নভেম্বর - ছোট মেশিন দিয়ে ড্রিলিং শুরু হয়।
১৫-১৬ নভেম্বর - Auger মেশিন অর্ডার করা হয়।
১৭ নভেম্বর - অগার মেশিন দিয়ে ড্রিলিং শুরু হয়।
১৮ নভেম্বর – ইন্দোর থেকে আরও অত্যাধুনিক মেশিন আসে।
১৯ নভেম্বর - এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, উদ্ধার অভিযানের দায়িত্ব গ্রহণ করে
২০ নভেম্বর - টানেলিং বিশেষজ্ঞরা বিদেশ থেকে এসেছেন
২১ নভেম্বর - প্রথমবারের মতো শ্রমিকদের কাছে সম্পূর্ণ খাদ্য-জল পৌঁছেছে।
২২ নভেম্বর – উল্লম্ব ড্রিলিংয়ে সাফল্য
২৩ নভেম্বর - উদ্ধারকারী দল শ্রমিকদের খুব কাছাকাছি আসে।
২৪ নভেম্বর - ৪১ শ্রমিককে রাতের মধ্যে উদ্ধারের সম্ভাবনা