শরিয়তি আইন মেনে নারী স্বাধীনতায় স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালিবান। কিন্তু, কথা ও কাজে ফারাক রয়েই গেল। আফগানিস্তানে ছেলেদের স্কুল খোলার অনুমতি দিয়েছে তালিবান। খুলেছে মেয়েদের স্কুলও। তবে, প্রাথমিকে। মাধ্যমিক বা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মেয়েরা পড়তে পারবে কিনা আফগানিস্তানের শিক্ষা দফতর প্রকাশিত বিবৃতিতে তার কোনও উল্লেখ নেই। যা নিয়ে মেয়েদের মধ্যে আশঙ্কার কালো মেঘ দানা বাঁধছে।
১৫ অগস্ট কাবুল দখল করেছিল তালিবান। এরপর গোটা দেশই তাদের দখলে। গত এক মাসের বেশি সময় বন্ধ সেদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। তবে, বিশ্বকে বার্তা দিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠা চালিতে সম্মতি দিয়েছে তালিবানরা। ক্লাস রুমে ছেলে-মেয়ে বসার ক্ষেত্রে বিভেদ মেনেই তা চলবে।
১৯৯৯-২০০১ সাল, এই পাঁচ বছরের তালিবান জমানায় ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছিল আফগানিস্তান। নাগরিক অধিকার বিপন্ন হয়েছিল। নারী সুরক্ষা ও অধিকার ছিল বাতুলতা। তালিবানদের দাবি, এবার আর সেই মৌলবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি হবে না। শরিয়তি আইন মেনে পড়তে পারবেন মহিলারা। তবে, মানতে হবে ক্লাস ঘরে ছেলে-মেয়ে বিভেদ নীতি মানতে হবে।
কাবুলে শনিবার থেকে খুলেছে সব স্কুল। ছেলেদের পাশাপাশি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের স্কুলও খোলা হয়েছে। রাজধানীর এক বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষিকা নাজিফে বলেন, 'নিয়ম মেনেই স্কুল খোলা হয়েছে। মেয়েরা সকালে ও ছেলেরা দুপুরে ক্লাস করছে। মেয়েদের মহিলারা ও ছেলেদের পুরুষরা পড়াচ্ছে।' তবে, যেসব স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রাইমারি ও সেকেন্ডারিতে পড়ান তাঁদের নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
সিক্ষা দফতরের বিবৃতিতে উঁচু ক্লাসের মেয়েজের স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ নেই। এতেই আশঙ্কা বেড়েছে। প্রশ্নের মুখে তাঁদের ভবিষ্যত। সেকেন্ডারি মেয়েদের স্কুলের এক শিক্ষিকা হাদিস রেজায়ী বলেন, 'মেয়েদের মনবল ভেঙে গিয়েছে, দ্রুত স্কুল খোলার জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার দিকে তাকিয়ে রয়েছে তারা।'
তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ স্থানীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, মেয়েদের স্কুল খোলার বিষয়টি বিবেচনাধীন। তবে কবে থেকে তা খুলতে পারে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনমও ধারণা দেননি তিনি।
রাজধানী শহর কাবুলের এক স্কুলের প্রিন্সিপা মহম্মদদ্রেজার কথায়, "নারী শিক্ষা একটি জাতির ভবিষ্যত গড়ে তোলে। একটি ছেলে শিক্ষা পেলে পরিবারের আর্থিক উন্নতি হয়। কিন্তু, নারী শিক্ষার প্রবাব সমাজে সব থেকে বেশি। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারেন তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।"
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন