ভারী বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পার্বত্য রাজ্যের জাডোন গ্রামে রবিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এরমধ্যে ৯ জন মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে মারা গেছেন। এছাডা়ও আরও ২০ জন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বলেই সন্দেহ করছেন উদ্ধারকারীরা। হিমাচলে মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ১৮ আগস্ট পর্যন্ত আবহাওয়া পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই।
পাশাপাশি, বৃষ্টিতে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বেশ কিছু গাড়িও জলে ভেসে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। এর ফলে, পার্বত্য রাজ্যের ৪৫২টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজও। এবছর ভারী বৃষ্টিতে বারবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো পার্বত্য রাজ্যগুলো। সেই দুর্বিপাক থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি এই রাজ্যগুলো। তার মধ্যে উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাত্রা পরিস্থিতির কারণে ২ দিন বন্ধ রাখা হয়েছে। দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের হাল অত্যন্ত খারাপ হয়ে ওঠায় আকাশপথে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, যে শিবমন্দির ভেঙে ৯ জন চাপা পড়েছেন, ঘটনার সময় সেই মন্দিরে শিবের আরতি চলছিল। সকাল তখন ৭টা ১৫। সেই সময় মন্দিরের ভিতরে অন্তত ৩০ জন ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু একটি টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। তিনি লিখেছেন, 'এখন পর্যন্ত নয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এখনও আটকে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করার কাজ তৎপরতার সঙ্গে করে চলেছে।'
আরও পড়ুন- ‘নুহ’-কাণ্ডে হিন্দু মহাপঞ্চায়েতের বৈঠক, ভয়ংকর দাবি পেশ, হিংসার শঙ্কা বাড়িয়ে মিছিলের সিদ্ধান্ত
ওই মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের নীচে অন্ততপক্ষে ২০-২৫ জনের আটকে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিমলার কয়েকজন শিক্ষকও নিখোঁজ। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিব মন্দিরের কাছেই। শিক্ষকদের কয়েকজন ঘটনার সময় ওই মন্দিরে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ। হিমাচল প্রদেশ আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই রবি এবং সোমবার পার্বত্য রাজ্যে একটি হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। পাশাপাশি, ১৯ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছে। কিন্তু, সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও, প্রায় ৩০ জন ভক্ত মন্দিরে জড় হয়েছিলেন। যার ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।