Advertisment

বস্তার নাশকতার দিনে স্থানীয়দের ‘মারধর’ করে পুলিশ, কেন তাঁরা নিগৃহীত?

আইজি (বস্তার) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে গ্রামবাসীদের আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর নেই। মাওবাদী দমনে ব্যস্ত ছিল আমাদের বাহিনী। অভিযোগ উঠলে অবশ্যই খতিয়ে দেখব।‘

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Chattishgarh Naxal Attack, bastar, CRPF, Amit Shah, Naxal Ambush

এই গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে শুরু হয়েছিল গুলির লড়াই।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের র‍্যাডারে ঢুকেছে বস্তারের অখ্যাত টেকলাগুদাম গ্রাম। ছত্তিশগড়ের এই গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলেই গত সপ্তাহে মাওবাদী-সিআরপিএফ গুলির লড়াইয়ে শহিদ ২২ জওয়ান। কিন্তু তারপর সেদিনেই পুলিশি নির্যাতনের শিকার গ্রামবাসীরা। সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন দুর্দশার কথা তুলে ধরলেন মাংদু বারসে, ভীমা কোরসারা।

Advertisment

সেই মাও নাশকতার দিনেই গ্রামবাসীদের শারীরিক নিগ্রহ করছে জেলা পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ টেকলাগুদা গ্রামের। গুরুতর এই অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বস্তারের আইজি সুন্দর রাজ। স্থানীয় গ্রামবাসী মাংদু বারসের অভিযোগ, ‘পুলিশ মেরে তাঁর মুখ ফাটিয়ে দিয়েছে। ভেঙে দিয়েছে দাঁতও।‘ অপর এক গ্রামবাসী ভীমা কোরসা বলেছেন, ‘পুলিশকে আসতে দেখেই আমরা দরজা বন্ধ করে দিই। বিপদ বুঝে যারা আগে ঘরবন্দি হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা মার খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে। তারপরেই জঙ্গলে গুলি বিনিময়ের শব্দ কানে আসে।‘

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে আইজি (বস্তার) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে গ্রামবাসীদের আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর নেই। মাওবাদী দমনে ব্যস্ত ছিল আমাদের বাহিনী। অভিযোগ উঠলে অবশ্যই খতিয়ে দেখব।‘

সেদিনের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,’ প্রায় ১৫০ জন গ্রামবাসী সেদিন গ্রাম ফাকা করে জঙ্গল দিয়ে পুবার্তি চলে গিয়েছিল। তাঁদের একটাই ভয় ছিল কোনওভাবেই যাতে মাওবাদী-সিআরপিএফ গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে না যায়।‘

প্রায় দেড় দিন গ্রাম ছাড়া ছিলেন স্থানীয়রা। যৌথ বাহিনী এলাকা ছাড়ার পর সোমবার সকলে গ্রামে ফিরেছে। এমনটাই জানান কোরসা নামে সেই গ্রামের এক কিশোর। জানা গিয়েছে এই টেকলাগুদাম গ্রামে লাগোয়া জঙ্গলে প্রথম সংঘর্ষ বাঁধে। তারপর সেটা ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম লাগোয়া এক কিমি দুরের ঝিরাগাঁও জঙ্গলে। এখান থেকেই ১৪ জন জওয়ানের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ৩১ জন চিকিৎসাধীন।

এদিকে, অপহরণের চারদিন পর অপহৃত জওয়ানের ছবি প্রকাশ করল মাওবাদীরা। সুকমার জঙ্গলে গেরিলা কায়দায় ২২ জন যৌথবাহিনীর জওয়ানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে মাওবাদীরা। তারপর রাকেশ্বর সিং মানহাস নামে জম্মুর বাসিন্দা ওই কোবরা জওয়ানকে কবজায় নেয় মাওবাদীরা। তার আগে মঙ্গলবার দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটির নেতারা সরকারপক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনার দাবি জানায়। তারপরই অপহৃত জওয়ানের ছবি সামনে আনল মাওবাদীরা।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তালপাতার অস্থায়ী ছাউনিতে প্লাস্টিকের মাদুরের উপর বসে রয়েছেন অপহৃত জওয়ান। সম্ভবত মাওবাদী ক্যাম্পের ছবি এটি। মানহাস গত ৩ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ। ওইদিনই সুকমা-বিজাপুর সীমান্তে ভয়াবহ মাও গেরিলা হামলায় শহিদ হন অন্তত ২২ জন জওয়ান। আহত হন ৩২ জন। তারপর গত সোমবার স্থানীয় সাংবাদিকদের ফোন করে মানহাসের অপহরণের কথা স্বীকার করে মাওবাদীরা।

মঙ্গলবার আরও নিশ্চিত করে মাওবাদীরা বিবৃতি জারি করে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। দ্রুত মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনার দাবি জানায় তারা। তবেই মানহাসকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে বলে জানায়। দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটির মুখপাত্র বিকল্প সেই প্রেস বিবৃতি জারি করে। এদিকে, বস্তারের আইজিপি মঙ্গলবারই নিশ্চিত করেছেন, মানহাস নিখোঁজ রয়েছেন। তারা মাওবাদীদের প্রেস বিবৃতি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।

amit shah CRPF Bastar Chattishgarh Naxal Attack Naxal Ambush
Advertisment