টিকটক তারকা তথা বিজেপি নেত্রী সোনালি ফোগাটের গোয়ার হোটেলে রহস্যজনক মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবিতে হরিয়ানার নানা জায়গায় মিছিল , বসল খাপ মহাপঞ্চায়েত। হিসারে হওয়া খাপ মহাপঞ্চায়েতে ঠিক হল আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকার সোনালি খুনে সিবিআই তদন্ত না করলে বড় আন্দোলনে নামা হবে। ঠিক এর পরেই গোয়া সরকার সোনালি ফোগাটের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে।
গত ২৩ অগাস্ট গোয়ায় মারা যান সোনালি। সোনালির পানীয়তে মাদক মিশিয়েছিল সহকর্মীরা, জেরায় সে কথা শিকারও করে নিয়েছে দুই অভিযুক্ত। সোনালির ময়নাতদন্তে দেখা যায় তাঁকে খুন করা হয়েছে। সোনালি মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে তাই বারবারই সিবিআই তদন্ত চেয়েছে পরিবার থেকে অনুরাগীরা।
গোয়ার বিজেপি সরকারের তদন্তে তারা খুশি নন, সিবিআই তদন্ত না হলে সোনালি হত্যারহস্য সামনে আসবে না বলে তাদের দাবি। ২০১৯ সালে হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে আদমপুর থেকে নির্বাচনে লড়ে হেরেছিলেন সোনালি।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত সোমবার বলেন, যে সরকার হরিয়ানার বিজেপি নেতা এবং অভিনেত্রী সোনালি ফোগাটের মৃত্যুর মামলা কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) এর কাছে হস্তান্তর করবে। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা সোনালি ফোগাটের তদন্ত সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পুলিশের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কিন্তু বারবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানান হয়েছে এবং তার মেয়েও দাবি করেছে যে মামলাটি সিবিআই-য়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
গত ২৩ আগস্ট গোয়ার একটি রেস্তোরাঁয় মৃত্যু হয় সোনালি ফোগাটের। তাকে রেস্টুরেন্ট থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এখনও পর্যন্ত গোয়া পুলিশ এই মামলায় সোনালির পিএ সুধীর সাংওয়ান এবং তার সঙ্গেই সুধীর সাংওয়ানকে গ্রেফতার করেছে। সোনালি মৃত্যু নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গোয়া সরকারেই মামলার দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: < ভিনধর্মে প্রেম! পুড়িয়ে নিজের মেয়েকেই খুন, যোগীরাজ্যে হাড়হিম করা ঘটনায় হুলস্থূল >
এর আগে গোয়া পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছিল এবং সুধীর সাংওয়ান সহ ৫ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, সোনালি ফোগাটের পরিবার ক্রমাগত সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছিল। এই ক্ষেত্রে, রবিবার একটি খাপ পঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছিল যাতে তদন্তটি সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করার দাবি করা হয়েছিল। সোনালি ফোগাটের মেয়ে যশোধরা নিজেও বারবার সেই দাবি জানিয়েছিলেন।
এর আগে, সোনালির ভাই রিংকু বলেছিলেন যে সরকার যদি সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিত, তবে খাপ মহাপঞ্চায়েত করার দরকার হত না। রিংকু আরও বলেন তার পরিবার গোয়া পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নয়।
প্রায় দু সপ্তাহ আগে, হরিয়ানা সরকার গোয়া সরকারকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিল বিজেপি নেত্রী সোনালি ফোগাটের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর এই বিষয়ে ফোগাটের পরিবারের সদস্যদের আশ্বাস দেওয়ার পরে হরিয়ানা সরকার এই পদক্ষেপ নেয়।
এখন থেকে সোনালি ফোগাট হত্যা মামলার তদন্ত এখন সিবিআই। গোয়া পুলিশ মামলাটি সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করবে। সোনালির মৃত্যু নিয়ে তার পেয়ে যশোধরা ফোগাটও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি দেন একই সঙ্গে রবিবারও সোনালি ফোগাট মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
'সরকারের কাছে আমাদের কোনো আশা নেই'
সোনালি ফোগাটের মেয়ে যশোধরা ফোগাট এর আগে বলেন, আমি মায়ের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। সরকারের কাছে এখন আমাদের কোনো আশা নেই বা তাদের কাছ থেকে কোনো আশ্বাসও আমরা পাইনি।
যশোধরার জীবন বিপন্ন?
কয়েকদিন আগে সোনালি ফোগাটের মেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে যশোধরা লিখেছেন, "আমার মা মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।" সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নিহতের পরিবারের তরফে যশোধরার জন্য পুলিশি নিরাপত্তার দাবিও করেছে। সোনালির মৃত্যুর পর তার মেয়ে যশোধরা তার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী। এমন পরিস্থিতিতে যশোধরার জীবন হুমকির মুখে বলে জানিয়েছে পরিবার।