Advertisment

ঋণ শোধ করতে নিজের দোকানে ডাকাতি, শ্রীঘরে স্বর্ণকার

"ধৃত ব্যবসায়ীর দোকানের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যের বিমা করা ছিল। তিনি সেই বিমার টাকা নিয়ে ঋণ শোধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নিজের দোকানে ডাকাতির চক্রান্ত ফাঁস সোনারপুরে (ফোটো- ফিরোজ আহমেদ)

নিখুঁত চিত্রনাট্য অনুযায়ী ফিল্মি কায়দায় নিজের সোনার দোকানে ডাকাতি। কিন্তু ডাকাতির ঘটনার কিনারা করতে পুলিশ তদন্তে নামতেই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে এলো। আপাতত শ্রীঘরে দোকানের মালিক দেবকুমার দেবনাথ সহ তিন কর্মচারী।

Advertisment

গত ২৫ শে আগস্ট ভরদুপুরে সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পাঁচ থেকে ছয় জনের দুষ্কৃতী দল ভোজালি আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ১২ কেজি রুপোর গহনা নিয়ে চম্পট দেয়। সেই সময়ে পুলিশি জেরায় দোকানের মালিক দেবকুমার দেবনাথ জানান, চার পাঁচ জন অপরিচিতি দুষ্কৃতী দোকানে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিখিয়ে ব্যাগে রুপোর গহনা নিয়ে আমাদের দোকানের ভিতরে বন্ধ করে রেখে তালাবন্ধ করে পালিয়ে যায়। দোকান মালিকের বক্তব্য খটকা লাগে দুঁদে পুলিশ অফিসারদের। ধন্দ বাড়ায় দোকান মালিকের কল লিস্ট ও কর্মচারীদের সঙ্গে ম্যাসেজ এর আদান প্রদান। এর পরই বারুইপুর থানা এবং বারুইপুর স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ তদন্তে নেমে জানাতে পারে দোকান মালিক দেনার দায়ে জর্জরিত। ঋণ শোধ করা নিয়ে দিনের পর দিন চাপ বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন, এ মরশুমে রাজ্যে সম্ভবত প্রথম প্রাণ কাড়ল সোয়াইন ফ্লু

জানা গিয়েছে, ব্যাবসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকার ঋণ এবং বাজার থেকে ২০ লক্ষ টাকার ঋণ সব মিলিয়ে প্রতি মাসে সুদ বাবদ খরচ হচ্ছিল ৫০ হাজার টাকা। এত টাকার ধার শোধ করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছিলেন সোনারপুর - চাম্পাহাটি দেবনাথ সিলভার হাউসের দোকানের মালিক তথা স্বর্ণ কার সমিতির সম্পাদক দেবকুমার দেবনাথ। এই দেনার দায় দায় থেকে মুক্তি পেতে স্বর্ণকার তাঁর স্ত্রী ও কর্মচারীদের সঙ্গে যুক্তি করে ডাকাতির ছক কষেন। এই ছকে সামিল হন দোকানের ম্যানেজার সমরান গাজি সহ আরও তিন জন ।

ধৃতদের বৃহস্পতিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন ।পুলিশ সুত্রের খবর, বুধবার রাতে জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ওসি লক্ষিকান্ত ঘোষ ও বারুইপুর থানার আই সি অরুপ ভৌমিক এর নেতৃত্বে বিশেষ টিম তল্লাশি চালিয়ে দোকানের মালিক সহ চার জনকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় দোকান থেকে পরিকল্পনা মাফিক লুঠ হওয়া ১২ কিলো রুপা। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিত সিনহা বৃহস্পতিবার দুপুরে বারুইপুর থানায় এক সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথা জানানা। তিনি বলেন, "ধৃত ব্যবসায়ীর দোকানের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যের বিমা করা ছিল। তিনি সেই বিমার টাকা নিয়ে ঋণ শোধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।"

পুলিশ সুপার আরো বলেন, "ডাকাতির জন্য দোকানমালিক নিজেই তিন ব্যাক্তিকে ঠিক করেছিলেন, অস্ত্রপ্রদর্শন করে ভয় দেখানোর কথাও সাজানো হয়। এর পর পারিপার্শ্বিক সূত্র ও মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে দেব কুমার বাবু সহ তার কর্ম চারি সহ তিন জন কে ধরে পুলিশ। দোকানে আগে থেকে লাল ব্যাগে লুকিয়ে রাখা ১২ কিলো রুপাও উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্যবসার সাথে আর কারা জড়িত, পুরােনো ঘটনার যোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।"

গত বছর সোনারপুর থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে ভরসন্ধায় সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাঁধা দেওয়ায় কুপিয়ে খুন করা হয় দোকানের মালিককে। গুলিবিদ্ধ হন আরও তিন জন। ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় ১ মহিলা সহ ৩ জন কে সেই সময় গ্রেফতার করে পুলিশ এর মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশি ডাকাত লাবলু সর্দার। এছাড়াও মঞ্জিলা খান নামে এক মহিলা।

district news
Advertisment