Advertisment

আরিফের প্রেমেই বেঁচে থাকার রসদ, স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে আহত সারস

পাখিটিকে নির্জন স্থানে রাখার বিষয়ে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বলেন....

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Sarus crane UP, Uttar Pradesh Sarus story, Saras crane UP zoo, Mohammed Arif Saras, trapped Saras UP, Indian Express news

আরিফ আর সারসের বন্ধুত্বের গল্পটা বেশ মজার, আমেঠির জামো ব্লকের বাসিন্দা আরিফের সঙ্গে বছর খানেক আগেই বন্ধুত্ব হয় সারসের। ২০২২ সালের আগস্টে, আরিফ সারস পাখিটিকে ক্ষেতে আহত অবস্থায় দেখতে পান। ডান পায়ে আঘাতের কারণে রক্ত ​​ঝরছিল সারসটির। সেখান থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে এসে পায়ে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেন আরিফ। সারসটি এরপর থেকে আরিফের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে দুজনের বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে।

Advertisment

তাঁর সেবায় ধীরে ধীরে পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠলেও জঙ্গলে ফিরে যায়নি। কারণ ততদিনে উদ্ধারকর্তার সঙ্গে তার গাঢ় বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে। আরিফের সঙ্গী হয়ে খেত-খামার, পথ-ঘাটে চরে বেড়াতে থাকে বনের পাখি। এমনকী তাঁর সঙ্গে খাবার খেতেও দেখা গিয়েছে সারসটিকে। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর এ হেন সখ্যতা নজর কাড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু এক পোস্টই বিপদ ডেকে আনে। বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় থাকা বন্য প্রাণীকে নিজের হেফাজতে রাখার জন্য FIR ও দায়ের করা হয় আরিফের বিরুদ্ধে।

তার আগে ২১ মার্চ বন্য প্রাণী টিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বিন বিভাগের কর্মীরা।  হঠাৎ করেই বেপাত্তা হয়ে যায় পাখিটি। পরে উদ্ধার করে সেটিকে কানপুর চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আরিফের বাড়ি থেকে সারস উদ্ধারের পর অখিলেশ যোগী রাজনৈতিক তরজা পৌঁছায় সপ্তম। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে আরিফের বাড়ি থেকে সারস উদ্ধার করা হলে কেন মোদীর বাসভবনে বিকোরণরত ময়ুরদের তুলে আনা হবে না!

পাশাপাশি এসপি বিধায়ক অমিতাভ বাজপেয়ী দাবি তোলেন সারস টিকে কোন এক অভয়ারণ্যে ছেড়ে আসার। ২৭ মার্চ অখিলেশ যাদব নিজে সারস টির সঙ্গে দেখা করতে কানপুর চিড়িয়াখানায় যান। অখিলেশ যাদবের পাখিটিকে দেখতে যাওয়া এক রাজনৈতিক মোড় নেয় বলেই জানিয়েছেন কানপুর চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা।

‘আরিফ কা সারসের বদলে’ ২৫ মার্চ থেকে সারস টির ঠাই হয় ৪০ বাই ২৫ একটি খাঁচা। দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে ২৪ ঘন্টা চলে পর্যবেক্ষণ। কানপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর কৃষ্ণ কুমার সিং বলেছেন, 'পাখিটি কেবল রান্না করা খাবার খেতে অভ্যস্ত ছিল এখন চাল ডাল ধনেপাতা,পালং শাকের মত  খাবার ও খাচ্ছে। হাত দিয়ে খাবারের বদলে এখন সারস টি নিজে মাটি থেকেও খাবার তুলে খেতে শুরু করেছে। পাখিটিকে নির্জন স্থানে রাখার বিষয়ে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বলেন, ' আমরা মানুষের কাছ থেকে পাখিটিকে দূরে রাখার চেষ্টা করছি যাতে প্রাকৃতিক বাসস্থানে পাখিটি অভ্যস্ত হয়'

তবে আরিফের ভালোবাসা এখনও ভোলেনি তিন বছরের সারসটি। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে সেই ভালোবাসা একেবারে কমে যাওয়ার পর পাখিটিকে বনে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিবেশের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্ক তৈরি করা আবশ্যিক। আর তারই সাম্প্রতিক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন অমেঠির আরিফ খান।

Kanpur
Advertisment