/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/07/Sri-Lanka-Crisis.jpg)
দুপুর নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর অফিসে ঢুকে পড়েন শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী।
প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালাতেই শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভ চরম আকার নিল বুধবার। ক্ষুব্ধ জনতা এদিন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের বাসভবন এবং কার্যালয় ঘিরে ফেলতেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। দেশের পশ্চিমভাগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হওয়ায় কার্ফু জারি হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যাতে বিক্ষুব্ধ জনতা না ঢুকতে পারেন, তাই জন্য সেনা পাহারায় মুড়ে ফেলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘের মিডিয়া সচিব দিনাওক কলম্বাজে জানিয়েছেন, পশ্চিম ভাগে বিক্ষোভ চরম আকার নেওয়ায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। রাজধানী কলম্বো-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল রয়েছে সেই ভাগে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন জনতা ঘিরে ফেলার কারণে কার্ফু জারি করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। ক্ষুব্ধ জনতাকে সরাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ। লাঠিচার্জ করা হয়েছে।
#WATCH | Sri Lanka: Protests erupt outside PM's residence amid heavy security deployment in Colombo as protestors raise slogans#SriLankaCrisispic.twitter.com/5rRPjXW0qU
— ANI (@ANI) July 13, 2022
এদিন গোটাবায়া দেশ ছেড়ে পালিয়ে মালদ্বীপে চলে যান ভোরে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী আয়োমা এবং দুজন দেহরক্ষী। সেনার বিমানেই তিনি মালে শহরে পৌঁছন। সেখানে মালদ্বীপ সরকার তাঁদের স্বাগত জানায়। এদিকে, শ্রীলঙ্কায় তখন বিক্ষোভ চরমে পৌঁছয়। গোটাবায়ার পর এবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের পালা। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা তাঁর বাসভবনের দিকে এগোতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর অফিসে ঢুকে পড়েন শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী। কিছুক্ষণের মধ্যেই কার্যালয় তাঁদের দখলে চলে যায়। অফিসের ছাদে উঠে দেশের জাতীয় পতাকা হাতে উল্লাস করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।
#WATCH Srilankan Prime Minister's Office taken over by protesters in Colombo pic.twitter.com/kZQ9QxbXPA
— ANI (@ANI) July 13, 2022
আরও পড়ুন গোটাবায়াকে পালাতে সাহায্য করেছে ভারত! হইচই হতেই পাল্টা জবাব দিল নয়াদিল্লি
এর পরই অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল। তিনি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। আজ দুপুরের মধ্যে রনিল পদত্যাগ না করলে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে পড়েন। সেনার চপার বিক্ষোভকারীদের উপর নজর রাখতে প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের উপর দিয়ে চক্কর লাগাতে থাকে।
এদিকে, সংবাদসংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও গোটাবায়ার ইস্তফাপত্র হাতে পাননি স্পিকার আবেবর্ধনে। তাই সরকারি ভাবে পদত্যাগ করেছেন গোটাবায়া এটা বলা যাবে না। কিন্তু ইস্তফা না দিয়েই কেন পালালেন গোটাবায়া, তাঁকে কি গ্রেফতার করা হতে পারে বা খুন হতে পারেন এমনটা আঁচ করেছেন প্রেসিডেন্ট? গত শনিবার যেভাবে তাঁর অবর্তমানে লঙ্কাবাসী প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢুকে পড়েছে তাতেই প্রমাদ গুনেছেন গোটাবায়া, মনে করছে লঙ্কার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন ইস্তফা দেওয়ার আগেই বউকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালালেন গোটাবায়া
উল্লেখ্য, এদিন ভোরেই ৭৩ বছরের গোটাবায়া বউ আয়োমা এবং দুই দেহরক্ষীকে নিয়ে সেনা বিমানে চেপে মালদ্বীপ পালিয়েছেন বলে খবর। তার পরেই রটে যায়, ভারতের তরফে গোটাবায়াকে পালাতে সাহায্য করা হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, “অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। কিন্তু ভিত্তিহীন এবং জল্পনা ছাড়া আর কিছুই না। ভারত শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে রয়েছে। সবরকম সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত। সংবিধান মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার উন্নতি এবং সমৃদ্ধির জন্য সাহায্য করবে ভারত।”