তীব্র আর্থিক সংকট, টালমাটাল অর্থনীতি ও দেশের বিপন্ন পরিস্থিতিতে বিপাকে শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকরা। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্গেই দ্বীপরাষ্ট্রের ওষুধের সংকট এখন এতটাই তীব্র যে কী দিয়ে চিকিৎসা করবেন, তা-ই ভেবে উঠতে পারছেন না চিকিৎসকরা। সাধারণ নাগরিকদের প্রতি এখন তাঁদের একটাই আবেদন, দয়া করে অসুস্থ হবেন না। আর, দুর্ঘটনার মুখে পড়বেন না। ঈশ্বরের কাছেও এখন তাঁদের এই একটাই প্রার্থনা। কারণ, এই পরিস্থিতি তৈরি হলে কার্যত বিনা চিকিৎসাতেই কাটাতে হবে শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের।
দীর্ঘদিনই জ্বালানি সংকটে ভুগছে দ্বীপরাষ্ট্র। এর ফলে বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানিও পাওয়া যাচ্ছে না শ্রীলঙ্কায়। হাসপাতালগুলোরও বিদ্যুতের অবস্থা বেহাল। এই পরিস্থিতিতে বিনা বিদ্যুতে কীভাবে অস্ত্রোপচার হবে, বা চিকিৎসা হবে, তা ভেবে উঠতে পারছেন না শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকরা। গোটা দ্বীপরাষ্ট্রের মত শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকরাও এখন সাহায্যের জন্য বাইরের দেশগুলোর মুখাপেক্ষী হয়ে বসে রয়েছেন। কারণ, অবিলম্বে সংকট মেটার কোনও নামগন্ধ নেই।
আরও পড়ুন- প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষ পালিয়েছেন, এখন কী ঘটছে শ্রীলঙ্কায়?
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে বছর ১৫-র হাসিনি ওয়াসানার কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। কিন্তু, তারপর যে প্রয়োজনীয় ওষুধ চালানো প্রয়োজন, সেটাই হয়তো হাসিনি পাবে না। ন'মাস আগে হাসিনির কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এখন তাঁর শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে কার্যকর রাখতে প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ার দরকার। কয়েক সপ্তাহ আগে এই জন্য হাসিনি যে ওষুধ বিনামূল্যে পেতেন, এখন সেটাই দিতে পারছে না হাসপাতালগুলো। তাঁকে প্রতিদিন সাড়ে আট খানা ট্যাবলেট খেতে হয়।
জোগান নেই। ঘাটতি বেড়ে গেছে। শ্রীলঙ্কার খোলা বাজারে এখন হাসিনিকে একটা ট্যাবলেট কিনতে হচ্ছে ২০০ মার্কিন ডলার দিয়ে। এরকম করে চালানো আর অসম্ভব। সেটা বেশ বুঝতে পারছে হাসিনির পরিবার। হাসিনির দিদি ইশারা থিলিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমাদের হাসপাতাল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, ফের কবে তাঁরা ওষুধ দিতে পারবে জানেন না।' শেষ পর্যন্ত মেয়ের জন্য বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন হাসিনির বাবা। আরব দেশে চাকরি নিয়েছেন। কিন্তু, শ্রীলঙ্কায় ওষুধের দামের জন্য মেয়ের চিকিৎসার খরচ কুলোতে পারছেন না।
Read full story in English